Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

ইপিজেডে ভাগ্যবদল নারীর

জসিম উদ্দিন, নীলফামারী

ইপিজেডে ভাগ্যবদল নারীর

উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করে ভাগ্যবদলে ফেলেন ভূমিহীন আঞ্জুয়ারা বেগম। ৯ বছর আগে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান স্বামী দুলাল হোসেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে তাঁর চোখে নেমে আসে অন্ধকার। এমন সময়ে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেন আঞ্জুয়ারা। একটা চাকরির আশায় ছুটে যান উত্তরা ইপিজেডে। ভেনচুরা নামক একটি কোম্পানিতে স্বল্প বেতনে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি পান।

নীলফামারী সদরের সোনারায় ইউনিয়নের পথ্থরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আঞ্জুয়ারা বেগম। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটারের পথ ইপিজেড। ভোরে সন্তানদের জন্য খাবার রান্না করে প্রতিদিন হেঁটে যান কর্মস্থলে। সন্ধ্যায় ফিরে সন্তানদের হাতে বই তুলে দিয়ে রান্নায় বসেন। বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে কথা হয় আঞ্জুয়ারার সঙ্গে।

তিনি জানান, ‘বাড়ির কাছে ইপিজেডে চাকরি করে সন্তানদের মুখে দুবেলা ভাত তুলে দিতে পেরেছি। বড় মেয়ে দুলালী বেগমকে বিয়ে দিয়েছি। আর এক মেয়ে গোলাপি বেগম স্থানীয় মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণিতে এবং ছেলে আনিছুর রহমান চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ছে।’ তিনি আরও জানান, উত্তরা ইপিজেডে চাকরি করে তাঁর মতো অনেক অসহায় নারী স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে আছেন।

ইপিজেডে কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে ৬৬ শতাংশই নারী, যা দেশের প্রত্যন্ত জেলাটিতে নারী ক্ষমতায়নেও অবদান রাখছে মনে করেন নীলফামারী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আজাহারুল ইসলাম। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, সরকারের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত একটি অঞ্চলের আর্থসামাজিক পরিবর্তন যে আনতে পারে, উত্তরা ইপিজেড তারই  উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এখানে ৩৫ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির ফলে এই অঞ্চলের দারিদ্র্য দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সূত্রমতে, উত্তরা ইপিজেডে ৩৫ হাজার শ্রমিকের মধ্যে ১৫ হাজার দক্ষ শ্রমিক রপ্তানিমুখী পণ্য উৎপাদনে কাজ করছেন। এখানে উৎপাদিত পরচুলা, খেলনা গাড়ি, চশমা, কফিন, লেদার ব্যাগ, তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্য ইউরোপ, আমেরিকা, জাপানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। এখানে কর্মরত শ্রমিকেরা প্রতি মাসে ৪০ কোটি টাকা আয় করেন।

স্থানীয় সোনারায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম শাহ জানান, ১৪-১৫ বছর আগে এ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে হাতে গোনা টিনের বাড়ির দেখা মিলত। এখন উত্তরা ইপিজেডে প্রায় সব পরিবারেরই দু-একজন চাকরি করেন। সবাই এখন আর্থিকভাবে সচ্ছল। অনেকেই পাকা বাড়ি করেছেন।
তিনি আরও জানান, ইপিজেডে যাতায়াতের জন্য ইউনিয়নের সব রাস্তা পাকা করা হয়েছে। কয়েকটি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে।নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ বলেন, ‘১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর উত্তরাঞ্চলের মানুষের কর্মসংস্থানের জন্য সোনারায় ইউনিয়নে ২১২ একর জায়গায় উত্তরা ইপিজেড স্থাপন করেন। নীলফামারীসহ দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও রংপুর জেলার প্রতিটি এলাকার মানুষ এখানে কাজ করেন। আমরা একসময় মঙ্গাপীড়িত অঞ্চল হিসেবে পরিচিত ছিলাম। ইপিজেড স্থাপিত হওয়ার কারণে এখন আর সেই অবস্থা নেই। আগে এখানে ঝুপড়ি ঘর বা ছাউনি ঘর দেখা যেত। এখন আর দেখা যায় না। এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের পাশাপাশি আর্থসামাজিক উন্নয়ন হয়েছে।’

নীলফামারীর চেম্বার্স অ্যান্ড কমার্সের সহসভাপতি ফরহানুল হক বলেন, উত্তরা ইপিজেডে আসছে পাইপলাইনে গ্যাস। এতে বিভিন্ন শিল্পকারখানার উৎপাদন খরচ কমে আসবে। অন্যদিকে রেল সংযোগ ও ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো (আইসিডি) স্থাপিত হলে আমদানি-রপ্তানি আরও সহজ হবে। উৎপাদন, বিপণন ও পরিবহন সাশ্রয়ী হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আকৃষ্ট হবেন। বর্তমানে ইপিজেডের কারণে এই অঞ্চলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অনেক উৎপাদনমুখী কারখানা গড়ে উঠেছে। সেখানে স্থানীয় নারীদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে লাভবানও হচ্ছেন তাঁরা। ফলে এই অঞ্চলে শিল্পায়নের বিকাশ ঘটছে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ