পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর গত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৬৭ দিনে দেড় শ কোটি টাকার বেশি টোল আদায় হয়েছে। সেতুতে পারাপার হওয়া ১১ লাখের বেশি যানবাহনের কাছ থেকে এই টোল পাওয়া গেছে। এতে প্রতিদিন গড়ে আদায় হয়েছে প্রায় সোয়া ২ কোটি টাকা। পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৬ জুন যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় পদ্মা সেতু। এর পর থেকে ৩১ আগস্ট (গত বুধবার) পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে ১১ লাখের বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এ সময়ে টোল আদায় হয়েছে মোট ১৫০ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫০ টাকা। এতে প্রতিদিন গড়ে আদায় হয়েছে ২ কোটি ২৪ লাখ ৭৯ হাজার ৯৩৫ টাকা।
পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী গত বৃহস্পতিবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গত বুধবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপার ১১ লাখ ছাড়িয়েছে। টোল আদায় হয়েছে দেড় শ কোটি টাকার বেশি। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতুর (যমুনা বহুমুখী সেতু) ক্ষেত্রে আমরা যেটা দেখেছি, সেতু নির্মাণের ৩ বছর পর যান পারাপার অনেক বেড়ে গিয়েছিল। পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রেও সেটা ঘটবে।’
এদিকে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত মোট যানবাহন পারাপার হয়েছে ১১ লাখ ১৬ হাজার ৪২৭টি।
ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যমতে, পদ্মা সেতু দিয়ে সবচেয়ে কম যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৬ আগস্ট। ওই দিন সেতু দিয়ে মাত্র ১০ হাজার ৭৬৩টি যান পারাপার হয়, আর সবচেয়ে বেশি যানবাহন পারাপার হয়েছে উদ্বোধনের প্রথম দিন ২৬ জুন। এদিন মোট ৫১ হাজার ৩১৬টি যানবাহন পারাপার হয়। এতে পদ্মা সেতুতে দৈনিক গড়ে যানবাহন পারাপার হয়েছে ১৬ হাজার ৬৬৩টি।
এদিকে গত জুলাই ও আগস্টে টোল আদায়ের পরিসংখ্যান বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, জুলাইয়ে দৈনিক গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি ৫৩ লাখ টাকার বেশি; কিন্তু আগস্টে গড়ে টোল আদায় হয়েছে ২ কোটি টাকার কম।
প্রকৌশলী আব্দুল কাদের এ ব্যাপারে আরও বলেন, সেতু উদ্বোধনের পর প্রথম মাসে অনেকেই শুধু সেতু দেখতে আসেন। কাজেই জুলাইয়ে গড় টোল আদায়ের থেকে আগস্টে আদায় কম হয়েছে, তা খুবই স্বাভাবিক। এ ছাড়া জুলাইয়ে ঈদের কারণে সেতু দিয়ে যান পারাপার বেশি হয়েছে।
প্রকৌশলী আব্দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর সম্ভাব্যতা সমীক্ষায় প্রতিদিন গড়ে যান চলাচল ধরা হয়েছিল সাড়ে ৭ হাজার। তবে এখন গড়ে তার দ্বিগুণ যানবাহন পারাপার হচ্ছে। পদ্মা সেতু দিয়ে কেমন যানবাহন পারাপার হবে, তা এখনই বোঝা যাচ্ছে না, আরও দুই মাস পর প্রকৃত ধারণা মিলবে। আশা করা যায় যান পারাপার আরও বাড়বে। কারণ, অনেক মানুষ আগে দক্ষিণাঞ্চলে লঞ্চে যাতায়াত করত। তাদের অনেকেই এখন এ পথে যাতায়াত করবে।