Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

শিকলমুক্ত সেই দুই শিশুর পরিবারে উপহারের বন্যা

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ

শিকলমুক্ত সেই দুই শিশুর পরিবারে উপহারের বন্যা

একটু খাবারের আশায় এবার আর অন্যের বাড়িতে উঁকি দিতে হয়নি ১০ বছরের সুমন ও তার ছোট ভাই সিমনকে। অন্যের কটুকথা থেকে বাঁচতে তাদের পায়ে আর শিকল পরিয়ে রাখেননি মা। কারণ হতদরিদ্র পরিবারটির করুণ কাহিনি পত্রিকায় প্রকাশের পর অনেকেই উপহারের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন।

তাদের বাবা আমির হোসেন ও মা শেফালী বেগম এবং আরও তিন ভাইবোনকে দেওয়া হয়েছে নতুন পোশাক। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, মাংস, আলুসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য উপহার মিলেছে অঢেল। ঈদের দিন তাই রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরশহরের পকিহানা এলাকার রেল বস্তির ঝুপড়িতে বয়ে যায় আনন্দের জোয়ার।

সুমন ও সিমনের বাবা আমির হোসেন বলেন, ‘১০ মাস আগোত কোরবানির ঈদোত মানুষ একনা গরুর গোশত দিচিল। ওই খাচি। পেপার হওয়ার পর ম্যালায় মানুষ বাড়িত খাবার নিয়া আলচে। কায়ও মুরগি, আবার কায়ও গরুর গোশত কিনে দিচে। এখন সেগুলো খাচ্ছি।’

আমির হোসেন অন্যের গরু বেচাকেনায় সহযোগিতা করেন। এতে কোনো দিন ২০০-৪০০ টাকা পান। কোনো দিন কিছুই পান না। আর ছোট ছোট সন্তান থাকায় তাঁর স্ত্রী শেফালী বেগমকে কেউ ঝিয়ের কাজও দিতেন না। এদিকে ক্ষুধার জ্বালা সহ্য করতে না পেরে শিশু সুমন ও তার ভাই সিমন এর ওর বাড়িতে যেত। অনেক সময় অন্যের ফলগাছে ঢিল ছুড়ত। এ নিয়ে মা-বাবাকে শুনতে হতো কটুকথা। তাই তাঁরা সুমন ও সিমনকে পায়ে শিকল পরিয়ে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখতেন। এ নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল আজকের পত্রিকায় ‘চুরির অপবাদ এড়াতে পায়ে শিকল শিশুদের’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ওই ঝুপড়িতে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ ও পৌর মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল। দুই শিশুর পায়ের শিকল খুলে দেওয়া হয়। তাঁরা পরিবারটিকে শুকনো খাবার ও টাকা উপহার দেন। গত রোববার সস্ত্রীক পরিবারটির কাছে যান দিনাজপুরের যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (বিদ্যুৎ) মো. কামরুজ্জামান।

তিনি পরিবারের সদস্যদের নতুন পোশাক ও টাকা দেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যক্তি ৪২ হাজার টাকা দামের একটি নতুন চার্জার ভ্যান উপহার দিয়েছেন আমির হোসেনকে। এ ছাড়া বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে ওই পরিবারের হাতে শুকনো খাবার ও ঈদ উপহার তুলে দেন উপজেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা। ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী ওয়ালিউর রহমান দোলন এম এ মতিন সরকারের পক্ষে শুকনো খাবার দেওয়া হয়। পরিবারের সব সদস্যকে নতুন পোশাক দেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) বাবুল চন্দ্র রায়। রংপুর-২ আসনের সাবেক সাংসদ আনিসুল ইসলাম মণ্ডল ছয় মাসের দুই বেলা খাবার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর বাইরে অনেকে নানা সহযোগিতা দিচ্ছেন। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য ৬ থেকে ৭ সেট করে কাপড় পেয়েছে। পরিবারটি ১৭৫ কেজি চাল ও ২০ লিটার সয়াবিন তেল পেয়েছে।

শেফালী বেগম বলেন, ‘অভাবের কারণে আগে ঈদের দিন নতুন শাড়ি পরতে পারিনি। ছইলগুলোকেও নতুন পিরান দিতে পারি নাই। ঈদের দিন সকাল-বিকাল গরু ও মুরগির গোশত ও পোলাও রান্না করে খাইছি। এই প্রথম ছইলগুলো নিয়া ঈদ ভালোমতো কাটল।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ