গোয়ালন্দ (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে রাস্তা আটকে পাকা স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার বিষ্ণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। গ্রামবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অভিযোগ, প্রায় ২৫-৩০ বছরের রাস্তাটি আটকে পাকা স্থাপনা করছেন স্থানীয় আব্দুল কাদের বেপারী। এতে কয়েকটি পরিবারের একমাত্র চলার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী হাউলিকেউটিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রোজিনা খাতুন বলেন, বিএস খতিয়ানে ভুলবশত প্রতিবেশী আব্দুল কাদেরের ৩৪ শতাংশ জমির পরিবর্তে ৩৭ শতাংশ হয়ে গেছে। এরপর তিনি রাস্তা দখল করে ইট দিয়ে প্রাচীর নির্মাণ করছেন। বাড়ি থেকে বের হওয়ার বিকল্প রাস্তা বা পথ না থাকায় তাঁরা মহাবিপদে পড়েছেন।
রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাচুরিয়া হয়ে গোয়ালন্দের অন্তারমোড় বরাটের পাকা রাস্তা। রাস্তাটির পূর্বে গোয়ালন্দের ছোটভাকলা ইউনিয়নের বিষ্ণপুর গ্রাম। পশ্চিমে রাজবাড়ী সদর উপজেলা। স্থানীয়রা জানান, প্রায় ২০-২২ বছর আগে যাতায়াতের সুবিধার্থে বিষ্ণপুর গ্রাম থেকে পাকা রাস্তায় উঠতে খালে পাইপ কালভার্ট নির্মাণ করে ইউনিয়ন পরিষদ। রাস্তায় ৪-৫ বার মাটি ফেলে উঁচু ও সংস্কার কাজ করে।
রাস্তার উত্তরে জমির মালিক আব্দুল কাদের দুই সপ্তাহ ধরে ভরাট কাজ করছেন। এ জন্য তাঁরা রাস্তার প্রবেশপথ বন্ধ করে দেন। গ্রামের লোকজন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনকে বিষয়টি জানালে তিনি গিয়ে রাস্তা খুলে দেন। রাস্তাটি বন্ধ না করারও নির্দেশ দেন চেয়ারম্যান। কিন্তু অভিযুক্তরা রাস্তার প্রবেশপথে পাকা খুঁটি নির্মাণ করছেন।
ভুক্তভোগী আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রায় ২৫ বছর ধরে এই রাস্তা দিয়ে আসা-যাওয়া করেন। চলাচলের সুবিধার্থে ইউনিয়ন পরিষদ খালে কালভার্ট নির্মাণ এবং রাস্তা করে দেয়। এখন কাদের বেপারী রাস্তাটি আটকে দিচ্ছেন। রাস্তাটি বন্ধ করে দিলে তাঁদের অন্তত আধা কিলোমিটার ঘুরে মূল সড়কে যেতে হবে। তাঁরা চান, সরকার যে রাস্তাটি করেছে সেটি যেন চালু থাকে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, এ বিষয়ে আমরা বসে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। রাস্তাটি চালু থাকলে কয়েক শ মানুষের যাতায়াতে সুবিধা হবে। এ ছাড়া জানা মতে, আব্দুল কাদেরের দখলে প্রায় ৩ শতাংশ জমি বেশি আছে। ওইটুকু ছেড়ে দিলেই রাস্তা ঠিক থাকে।
অভিযুক্ত আব্দুল কাদের বেপারী বলেন, ‘আমার জমিতে আমি কাজ করছি, কার কি? আমি কারও রাস্তা দেব না।’ তাঁর দখলে ৩৪ শতাংশের জায়গায় ৩৭ শতাংশ জমি আছে কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘রেকর্ড হয়ে গেলে আমি কি করব? ৩৪-৩৭ শতাংশ বুঝি না? যা আছে তো আছেই। আমি কারও রাস্তা দেব না।’
ছোটভাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, রাস্তাটি প্রায় ৩০ বছরের। সরকারি অর্থায়নে রাস্তাটি করা হয়েছে। আগের চেয়ারম্যানরা রাস্তাটি করেন। এমনকি সরকারিভাবে কালভার্ট বসানো আছে। কাদের বেপারী এক প্রকার জোর করে রাস্তা আটকানোর চেষ্টা করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে বসে সমাধানের চেষ্টা করেছেন। পরে জানতে পারেন, জমি দখলে বেশি আছে। আজ শনিবার আবার বসে বিষয়টি সমাধানের তারিখ ঠিক করেছেন। রাস্তা আটকানোর কোনো সুযোগ নেই।