দীর্ঘ ২৫ বছরেও সংস্কার হয়নি সড়কটি। জনপ্রতিনিধিদের আশ্বাসে আশ্বাসে কেটেছে এতগুলো দিন। দুর্ভোগ লাঘবে বাধ্য হয়ে গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কটির কিছু অংশ সংস্কার করেছেন। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার আমুকোনা বেতাপুর ঈদগাহ থেকে মৌলভীবাজারের গোরারাই বাজার সড়ক এটি। দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় মেঠোপথে পরিণত হয়েছে এই সড়ক।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আউশকান্দি বাজার থেকে আমুকোনা বেতাপুর ঈদগাহ হয়ে দেবপাড়া ইউনিয়নের ফরিদপুর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গোরারাই বাজার এটি। সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন নবীগঞ্জ ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে।
প্রতিটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ওই সড়কটির সংস্কার-ইস্যু ভোট আদায়ের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সড়কটি সংস্কার করবেন বলে আশ্বাস দেন সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী। সেই আশ্বাসে এলাকার মানুষ সড়কটি সংস্কারের জন্য এককাট্টা হয়ে তাঁকে ভোট দেন। নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হওয়ার পর সড়কটির এক কিলোমিটার অংশ পাকা করেন।
পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও সড়কটি আর সংস্কার হয়নি। সংসদ সদস্য ফরিদ গাজী মারা যাওয়ার পর ২০১২ সালের উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী বিএনপি নেতা শেখ সুজাত মিয়া নির্বাচনে বিজয়ী হলে সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দেন; কিন্তু ওই নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলেও সড়কটি সংস্কার হয়নি।
২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এম এ মুনিম চৌধুরী বাবু বিজয়ী হলে সড়কটি সংস্কারের আশ্বাস দেন। নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হলেও এটি সংস্কার করতে পারেননি। ফলে হতাশ হন এলাকাবাসী। ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সাবেক মন্ত্রী দেওয়ান ফরিদ গাজীর ছেলে গাজী শাহনওয়াজ মিলাদ বাবার নির্বাচনী ওয়াদা পূরণের আশ্বাস দিয়ে সড়কটি সংস্কারের কথা বলেন। এলাকাবাসী তাঁকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেন।
নবীগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা সাব্বির আহমদ বলেন, ‘সড়কটি বিশেষ প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি, চলতি বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাই এমপি মহোদয় বিশেষ প্রকল্পে সড়কটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করার তাগিদ দিয়েছেন।’
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য গাজী মো. শাহনওয়াজ মিলাদ বলেন, ‘সড়কটি আমার নির্বাচনী ওয়াদা। সেটি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। ইতিমধ্যে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে দরপত্র হয়ে যাবে।’