মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঝিকরগাছা
ফুলের রাজধানীখ্যাত ঝিকরগাছার গদখালীতে টিউলিপের পর এবার বিদেশি ফুল লিলিয়ামও ফুটেছে। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য পাওয়ায় লিলিয়ামের বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে নতুন সম্ভাবনা দেখছেন চাষি ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট।
ফুলের রাজধানীর অদূরে হাড়িয়া গ্রামের মাঠে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় লিলিয়াম ফুলের পরীক্ষামূলক চাষ করেন সাজেদা খাতুন। পরীক্ষামূলক চাষে সাফল্য আসায় তিনি এখন বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন করতে চান লিলিয়াম ফুল। সাজেদা খাতুন হাড়িয়া গ্রামের ইমামুল হোসেনের স্ত্রী।
নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, কানাডা, আমেরিকার মতো শীতপ্রধান দেশে এ ফুলের ব্যাপক চাষ হয়। বাহারি রং ও আকর্ষণীয় সুগন্ধের জন্য লিলিয়ামের খ্যাতি বিশ্বজোড়া।
হাড়িয়া মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, সূর্যের আলো ও তাপ নিয়ন্ত্রিত পালি শেডের মধ্যে সারি সারি ফুটে রয়েছে লিলিয়াম ফুল। সাজেদার এই সফলতায় লিলিয়াম ফুল চাষে আশা জাগাচ্ছে স্থানীয়দের। বিশেষ করে, ফুলের রাজধানী গদখালীতে লিলিয়াম ফুল চাষে নবদিগন্ত তৈরি হবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা।
সাজেদা খাতুন বলেন, ‘শয্যা তৈরির পর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের দেওয়া ৪০০ লিলিয়াম ফুলের বাল্ব (বীজ হিসেবে ব্যবহৃত রূপান্তরিত কন্দ) রোপণ করি। ৪২ দিনের মাথায় গাছে ফুল ফোটে। বারি ১ ও ২ জাতের ৪০০টি গাছেই ফুল ফুটেছে। তা বেশি দিন গাছে রাখতে ফোটার আগে ফুলে ক্যাপ পরিয়ে দিয়েছি। এতে ফুল অন্তত আরও ১০ দিন গাছে রাখা যাচ্ছে।’
লিলিয়াম চাষি সাজেদা আরও বলেন, ‘চারটির মধ্যে দুটি বেডের ফুল ভালোবাসা ও বসন্তবরণ দিবস উপলক্ষে বিক্রি করেছি। তাতে ৩০ হাজার টাকা হয়েছে। বাকি দুটি বেডের ফুল আজ (বুধবার) তুলেছি। সব মিলিয়ে পঞ্চাশ হাজার টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে। চারটি বেডের করতে মোট খরচ হয়েছিল পাঁচ হাজার টাকা।’
ফুল ব্যবসায়ী সমিতির নেতা আব্দুর রহিম বলেন, ‘২০০৮ সালে প্রথম গদখালীতে পরীক্ষামূলক লিলিয়ামের চাষ করা হয়েছিল, কিন্তু লিলিয়ামের বাল্ব সংরক্ষণের ব্যবস্থা না করতে পারায় তখন বাণিজ্যিকভাবে এগোনো যায়নি। অবশ্য টিস্যু কালচারের মাধ্যমে সে সময় গাছ করা গেলেও তাতে সময় বেশি লেগেছিল।’
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, ‘আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা গবেষণায় সফল হয়েছেন; যার দরুন এখানে লিলিয়ামের বারি-১ ও ২ ফুলের সফল চাষ হয়েছে।’