পাইকগাছা পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীর চরে। সেখানে বনায়ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কিছুদিন ধরে ওই বর্জ্যে রাতের আঁধারে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে পুড়ে যাচ্ছে বন। বিষয়টি দেখার জন্য এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার শিবসা নদীর চর ভরাটি জায়গায় ২০১৪ সালে ৫ হেক্টর জমিতে বনায়ন করা হয়। এ বনের পাশেই নদীর চরে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিছুদিন ধরে ওই বর্জ্যেই রাতের আঁধারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ আগুনে বনের গাছপালা পুড়ে মরে যাচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করছে। অপর দিকে গাছ মরে বন উজাড় হওয়া জায়গা প্রভাবশালীরা কৌশলে দখল করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
২০১৪ সালে উপজেলার শিবসা নদীর চর একের পর এক দখল হয়ে যাচ্ছিল। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কবির উদ্দিন শিববাটি থেকে মাছকাটা পর্যন্ত শিবসা নদীর চর ভরাটির পাঁচ হেক্টর জমিতে বনায়ন করেন। এখানে গোলপাতা, গেওয়া, বান, ওড়া, কেওড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে।
আট বছরে গাছগুলো অনেক বড় হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন এ বনায়নের দেখাশোনার দায়িত্ব দেন বাতিখালী বনায়ন সমিতিকে। এ বিষয়ে বাতিখালী বনায়ন সমিতির সভাপতি আজহারুল ইসলাম বলেন, শিবসা নদীর চর ভরাটি জায়গা অবৈধভাবে দখল হয়ে যাচ্ছিল। সে কারণে আমাদের বাতিখালী সমিতির মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন বনায়ন করে।
কিন্তু বনের কিছু জায়গার গাছ কেটে চিংড়িঘের, বসতবাড়িসহ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে। অপর দিকে বনের মধ্যে পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। সেই বর্জ্য আগুনে পুড়িয়ে দেওয়ায় গাছপালার ক্ষতি হচ্ছে। মরা গাছ কেটে ওই স্থান দখল করে নিচ্ছে কিছু অসাধু ব্যক্তি।
পাইকগাছা পৌরসভার প্যানেল মেয়র শেখ মাহবুবর রহমান রঞ্জু বলেন, ‘আমরা পৌরসভার বর্জ্য শিবসা নদীতে ফেলা বন্ধ করে দিয়েছি। আগের যেসব ময়লা-আবর্জনা ছিল, সেগুলো কে বা কারা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে। সে আগুনে কিছু গাছ মারা গেছে বলে স্বীকার করেন তিনি। তবে ওই স্থান কাউকে দখল করতে দেবেন না বলে তিনি জানান।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, ‘পৌরসভা আমাদের কাছে আবেদন করেছে ডাম্পিং স্টেশন করার জন্য। সেটি ভেবে দেখা হচ্ছে কোথায় স্টেশন করা যায়। তবে ময়লা-আবর্জনার আগুনে গাছপালা পুড়বে সেটি হতে দেব না। এ ছাড়া চরের জায়গা কেউ অবৈধভাবে দখল করলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’