বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকা
চলচ্চিত্র নির্মাণে প্রযোজক ও নির্মাতাদের প্রেরণা দিতেই দেওয়া হয় সরকারি অনুদান। কিন্তু প্রতিবছর নিয়মিত অনুদান দেওয়া হলেও নিয়মিত আলোর মুখ দেখে না সব সিনেমা। এমনকি অনুদানের অর্থ নিয়েও বছরের পর বছর সিনেমার কাজ শুরু করেননি অনেকে। তবে দৃশ্যপট পাল্টাতে শুরু করেছে। এ বছর যেন মুক্তির হিড়িক পড়েছে অনুদানের সিনেমার। বলা চলে অনুদানের সিনেমায় ভর করেই চলছে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি।
শুরুটা হয়েছিল ইফতেখার শুভ পরিচালিত ‘মুখোশ’ সিনেমার মাধ্যমে। পরিচালকের নিজের লেখা উপন্যাস ‘পেজ নম্বর ফোরটি ফোর’ অবলম্বনে তৈরি হয়েছে ‘মুখোশ’। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম, পরীমণি, রোশান প্রমুখ। এরপর মুক্তি পেয়েছে ‘গলুই’, ‘বিউটি সার্কাস’, ‘আশীর্বাদ’, ‘হৃদিতা’, ‘ভাঙন’, ‘দেশান্তর’ সিনেমাগুলো। আগামী ২ ডিসেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ২০১১-১২ অর্থবছরে সরকারি অনুদান পাওয়া ‘হডসনের বন্দুক’। সৈয়দ শামসুল হকের লেখা গল্প অবলম্বনে সিনেমাটি বানিয়েছেন প্রশান্ত অধিকারী। নানা কারণে বহুবার বিঘ্ন ঘটেছে সিনেমার শুটিংয়ে। অবশেষে ৯ বছর পর আলোর মুখ দেখছে সিনেমাটি। ‘হডসনের বন্দুক’ ছবিতে অভিনয় করেছেন মাহমুদুল ইসলাম মিঠু, মৌসুমী হামিদ, লুৎফর রহমান জর্জ, জোবায়ের, মিশু চৌধুরী, রাশিয়ান অভিনেতা মাজিদ সিখালাইভ প্রমুখ। ঢাকা, সিলেট, শ্রীমঙ্গল, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শুটিং হয়েছে।
নভেম্বরে মুক্তির কথা ছিল ২০১৯-২০ অর্থবছরে অনুদান পাওয়া ‘বীরকন্যা প্রীতিলতা’ সিনেমাটি। শেষ মুহূর্তে মুক্তির তারিখ পিছিয়ে দিয়েছেন নির্মাতা প্রদীপ ঘোষ। শিগগিরই মুক্তির নতুন তারিখ জানাবেন তিনি। ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারকে নিয়ে এই প্রথম কোনো চলচ্চিত্র নির্মাণ হয়েছে। সিনেমাটিতে প্রীতিলতা চরিত্রে অভিনয় করেছেন নুসরাত ইমরোজ তিশা, বিপ্লবী রামকৃষ্ণ বিশ্বাসের চরিত্রে মনোজ প্রামাণিক এবং মাস্টারদা সূর্যসেন চরিত্রে অভিনয় করেছেন কামারুজ্জামান তাপু।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘জয় বাংলা’ সিনেমাটি। এতে অভিনয় করেছেন বাপ্পী চৌধুরী, জাহারা মিতু প্রমুখ।
এ ছাড়া মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে রায়হান জুয়েল পরিচালিত ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’, অরুণা বিশ্বাসের ‘অসম্ভব’, রোজিনার ‘ফিরে দেখা’, অপূর্ব রানার ‘জলরঙ’ সিনেমাগুলো।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানাচ্ছেন, কেবল অনুদানের অর্থে পুরো সিনেমা নির্মাণ সম্ভব হয় না। তাই প্রযোজক নিশ্চিত করতেও অনেক সময় চলে যায়। তা ছাড়া, করোনা পরিস্থিতির কারণে দুই-তিন বছর শুটিংই করা যায়নি। ভালো সিনেমার অভাবে দর্শকও হলবিমুখ হয়ে পড়ছিল। চলতি বছরে বেশ কয়েকটি সিনেমার সুবাদে দর্শক হলে ফিরতে শুরু করেছে। তাই নির্মাতারা সিনেমা মুক্তি দেওয়ার সাহস ও আগ্রহ ফিরে পেয়েছেন।