কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে ধানি জমিতে চাষ করা হচ্ছে তামাক। এতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাবসহ কৃষক পরিবারে স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিয়েছে। খাদ্যশস্য চাষে খরচই ওঠে না। তাই লাভের আশায় তামাক চাষ করছেন কৃষকেরা।
উপজেলায় সাধারণত ভার্জিনিয়া জাতের তামাক চাষ করা হচ্ছে। ভার্জিনিয়া তামাক বিড়ি, সিগারেট তৈরিতে এবং গাছ জ্বালানি হিসেবে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। উপজেলায় তামাক চাষে বিভিন্ন কোম্পানি কৃষকদের নানা প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহিত করছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ফুলবাড়ীতে তামাক চাষের কোনো লক্ষ্যমাত্রা নেই। তবে বেসরকারি হিসেবে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে ৪৫ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে।
উপজেলার শাহবাজার, বিদ্যাবাগিশ, গজেরকুটি, বালাতাড়ি, কুরুষাফেরুষা, ধুলারকুটি, কৃষ্ণানন্দসী, গোড়কমণ্ডলসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা সমকালীন ফসলের জমির পাশে চাষকৃত তামাকের জমি থেকে তামাক পাতা কেটে শুকানোর কাজ করছেন। জমির পাশের রাস্তার দুই পাশে, লোকালয় ও কৃষকের বাড়িতে চালা তৈরি করে তামাক শুকাচ্ছেন।
উপজেলার পূর্ব ধনিরাম গ্ৰামের চাষি হাছেন আলী বলেন, ‘তামাক চাষ করলে কোম্পানির লোক টাকা, সার, বীজ দেয়। আবার নগদ টাকা দিয়ে তামাক কিনেও নেয়। তাই ধানের আবাদ না করে তামাক চাষ করেছি।’
পূর্ব ধনিরাম গ্ৰামের চাষি ফনি ভূষণ ও ধরণি কান্ত বলেন, ‘আমরাসহ ২০০ কৃষক তামাক চাষ করেছি। চাষে খরচ সব মিলিয়ে বিঘায় ২০ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমির তামাক বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা। খরচ বাদে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকায় থাকে।’
তামাক পাতা বাছাই ও শুকানোর কাজে নিয়োজিত নওদাবাস গ্ৰামের নারী শ্রমিক জুলেখা বেগম স্বাস্থ্যের ক্ষতি সম্পর্কে বলেন, ‘যখন তামাকের কাঁচা পাতা তুলে কাঠিতে গেঁথে শুকানো হয়, তখন গন্ধে মাথা ঝিমঝিম করে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, ‘তামাক চাষ পরিবেশ, কৃষিজমি এবং জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। আমরা তামাক চাষে কৃষকদের নিরুৎসাহিত করছি।’