হোম > ছাপা সংস্করণ

মানুষ মারার লাইসেন্স দিচ্ছি চালককে

ড. মো. শামসুল হক

মহাসড়কে যদি পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিজেদের দায়িত্ব পালন করত, তাহলে চালকেরা এত বেপরোয়া হতো না। কারণ, আমি যদি প্রতিযোগিতার আয়োজন করি, কিন্তু রাস্তায় দ্রুতগতিতে সুশৃঙ্খলভাবে চলার জন্য আইন থাকে, বাস্তবায়নের জন্য নিবিড় নজরদারি থাকে; তাহলে এত আনফিট গাড়ি, আনফিট চালক কীভাবে থাকে?

দুর্ঘটনা ঘটনার পরে প্রথম আউটকামটা হয়—চালকের যোগ্যতা নেই, ভারী গাড়ি চালানোর লাইসেন্স নেই, গাড়ির ফিটনেস নেই; কিন্তু সেটা চলছে।

রমিজউদ্দিনের দুর্ঘটনা থেকে শুরু করে মিশুক মুনীর, আবার ৪৪টা শিশু মারা গেল। সব বড় দুর্ঘটনায় দেখা যায়, হেলপার চালাচ্ছেন, কিংবা যে চালক চালাচ্ছেন, তাঁর এবং গাড়ির যোগ্যতা নেই। এই স্যাম্পল থেকেই বোঝা যায়, দুর্ঘটনা ঘটলে যখন দেখছি নেই, তাহলে যেগুলো চলছে সেগুলোতেও নেই। চলছে তাহলে কীভাবে? নজরদারিটা নেই। আর এটা ম্যানেজেবল। চালকেরা জানে, ধরা পড়লে ম্যানেজ করে ফেলতে পারবেন। এটা আরেকটা বড় কারণ দুর্ঘটনার। আমি যদি বেপরোয়া হতে চাই, বছরের পর বছর চালাতে পারি। সুযোগটা নিয়ন্ত্রক কর্তারাই করে দিচ্ছে।

বিআরটিএ করে কী? চালককে যোগ্যতা যাচাই করে চালানোর ছাড়পত্র দেয়। সে যদি বিআরটিএর কম্পাউন্ডের ভেতরে জিগজ্যাগ করে, বাস্তব চ্যালেঞ্জে যেটার সম্মুখীন হবে, সেই রাস্তায় যেখানে চালাবে সেখানে কোনো পরীক্ষা না করে লাইসেন্স দিয়ে দেয়; তার মানে চালকের ভুলত্রুটির দায় বিআরটিএ এড়াতে পারে না। আইনে বলা আছে, রাস্তায় আধাঘণ্টা চালাতে হবে। কিন্তু সাইন এবং মার্কিং পড়তে পারে কি না, যাচাই না করে নিজের আঙিনায় চেক করে লাইসেন্স দিচ্ছে। এখানে বিরাট একটা ভুল হয়ে যাচ্ছে। আমরা চালককে যে লাইসেন্স দিচ্ছি, সেটা মানুষ মারার লাইসেন্স। কারণ, তাঁর আসল যোগ্যতা যাচাই করলাম না।

ফিটনেস যেটা দেয়, চোখে দেখে কম সময়ের মধ্যে দিয়ে দেয়। বিআরটিএ টাকাটা পায় এটাই শেষ। আনফিট গাড়িও পার হয়ে যাচ্ছে। ঢাকার মধ্যে দেখেন, চোখের সামনে চলছে, হেডলাইট নেই, আয়না নেই, বডি ভাঙাচোরা, ইঞ্জিন থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। লেগুনাগুলো ১০-১২ বছরের বাচ্চারা চালাচ্ছে। রাজধানীতেই এই অবস্থা, দেশের অবস্থা বুঝে নেওয়া সহজ।

আনফিট গাড়ি ও চালকেরা যখন-তখন রাস্তায় নামছে। যতই রাস্তায় বিনিয়োগ করি না কেন, জন্মটা হচ্ছে ঝুঁকিপূর্ণ। বিজ্ঞান বলে ৫ ঘণ্টার বেশি একটানা চালানো উচিত নয়। তাহলে একেকটা বাণিজ্যিক গাড়িতে দুজন করে চালক দরকার। বিআরটিএর কাছে নিবন্ধিত ভারী গাড়ির সংখ্যাও আছে, কত চালকের সংকট সেটাও আছে। ৫ ঘণ্টার জন্য যেখানে দুজন চালক থাকার কথা। একজন হিসাবেও সংকট। কিন্তু আমি ভারী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিয়ে দিচ্ছি। তার মানে সে নিজেই বলে দিচ্ছে, যেহেতু চালক নেই, তাহলে আপনারা চালান। তাহলে সব জেনেও যখন ভারী গাড়ির রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে এবং দুর্ঘটনা হচ্ছে, এটার দায় কিন্তু বিআরটিএ এড়াতে পারে না।

ড. মো. শামসুল হক, পরিচালক দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্র, বুয়েট

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন