কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমে প্রায় সাত হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তবে গত বছরের লোকসানের ক্ষত নিয়েই পুরোদমে আলু চাষ শুরু করেছেন চাষিরা। সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলু চাষে ঝুঁকি নিচ্ছেন তাঁরা।
চলতি মৌসুমে সংরক্ষণে সরকারের সুদৃষ্টি কামনার পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানির সুযোগ করে দেওয়ার দাবিও করছেন কুড়িগ্রামের আলুচাষিরা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৯০০ হেক্টর। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, জেলায় মোট ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর বীজ রোপণ শেষ হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষকেরা আলুর বীজ রোপণে ব্যস্ত। আবার কোথাও কোথাও জমি তৈরিতে ব্যস্ত।
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের চাষি মামুনুর রশীদ গত বছর লোকসান হলেও এবার আট একর জমিতে আলুর চাষ করেছেন। তবে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এবারও লোকসানের আশঙ্কা করছেন তিনি। কৃষকদের স্বার্থে আলুর ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে সরকারের কার্যকর ভূমিকা দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘গত বছর আলু চাষ করে ক্ষতির মুখে পড়েছিলাম। এবার সার ও কীটনাশকের দাম বেড়েছে। এতে খরচ আরও বেড়ে যাবে। তবে আশার কথা, বীজের দাম গতবারের তুলনায় কিছুটা কম। তবু লাভের আশা করা যাচ্ছে না। এ জন্য সরকারের সহায়তা বড্ড প্রয়োজন। সরকারের কাছে দাবি, আলুর ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ ও রপ্তানির সুযোগ করে দেওয়া হোক।’
উলিপুরের আলুচাষি হোসেন আলী বলেন, ‘৫ বিঘা জমিতে আলুর বীজ রোপণ করেছি। ফলন ও দাম ভালো পেলে লাভের মুখ দেখব।’
খামারবাড়ী কুড়িগ্রামের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, ‘এ অঞ্চলের মাটি আলু চাষের উপযোগী হওয়ায় চাষিরা ব্যাপক হারে আলু চাষাবাদ করছেন। আশা করছি, জেলায় এ বছর লক্ষ্যমাত্রার বেশি আলু উৎপাদিত হবে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। মৌসুমের শৈত্যপ্রবাহ মোকাবিলা করাসহ প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও ছত্রাকনাশক প্রয়োগের ব্যাপারে আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দিচ্ছি। কৃষকদের দাবির কথা বিবেচনা করে আলুর বাজারমূল্য নির্ধারণে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে।’