নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ডলার-সংকটের সময়েও সরকারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। শুধু ডলারের দাম বাড়ার কারণেই গত ছয় মাসে বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসলে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেশি ব্যয় করতে হয়েছে। যদিও এ সময়ে ঋণের ছাড় ও নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতি ব্যাপক হারে কমেছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ইআরডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের (জুলাই-ডিসেম্বর) ছয় মাসে ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধে ১০৫ কোটি ৩৪ লাখ ডলার ব্যয় করেছে বাংলাদেশ। আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল প্রায় সমান, ১০৪ কোটি ৩ লাখ ডলার। ডলারের মানে পরিশোধের পরিমাণ প্রায় সমান থাকলেও টাকার অঙ্কে প্রায় হাজার কোটি টাকা বেশি শোধ করতে হবে। টাকার অঙ্কে ছয় মাসে শোধ করতে হয়েছে ১০ হাজার ১৪০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ৮ হাজার ৮৭৮ কোটি টাকা। টাকার অঙ্কে বেশি শোধ হয়েছে ১ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময় ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৬ টাকার আশপাশে, যা বর্তমানে ১০০ টাকার ওপরে রয়েছে।
যে অর্থ শোধ হয়েছে তার মধ্যে ঋণের আসল শোধ হয়েছে ৭ হাজার ৪৯৬ কোটি, যা গত বছর ছিল ৬ হাজার ৬৬৭ কোটি টাকা, আর সুদ পরিশোধ করতে হয়েছে ২৬৪ কোটি, যা গত বছর ছিল ২২২ কোটি টাকা।
ছয় মাসে ঋণ ছাড় হয়েছে ৩৭৮ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৪১৭ কোটি ৫৯ লাখ ডলার। বছরের ব্যবধানে ছাড় কমেছে ৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ বা ৩৯ কোটি ৫৩ লাখ ডলার। মোট ছাড়ের মধ্যে অনুদান রয়েছে ২০ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময় ছিল ১৫ কোটি ৬ লাখ ডলার। সে হিসাবে অনুদান পৌনে ৬ কোটি ডলার বেড়েছে।
অর্থছাড়ের পাশাপাশি নতুন ঋণের প্রতিশ্রুতিও কমেছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ১৭৬ কোটি ২২ লাখ ডলার। এর আগের বছরের একই সময়ে প্রতিশ্রুতি এসেছিল প্রায় ৪৩০ কোটি ডলার। সে হিসাবে প্রতিশ্রুতি কমেছে ৬০ শতাংশ।
শুধু এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ছাড়া সব উন্নয়ন সংস্থা থেকে প্রতিশ্রুতি কম পেয়েছে বাংলাদেশ। গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ২ কোটি ডলার বেশি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। এ সময়ে এডিবি ৮৩ কোটি ৮২ লাখ ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিশ্বব্যাংক গত বছরের একই সময়ে ঋণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ৫০ কোটি ডলারের, এবার দিয়েছে মাত্র ৩০ কোটি ডলারের।