ডুমুরিয়া উপজেলা সদরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের তিন মাস যেতে না যেতে আবারও সেখানে স্থাপনা নির্মাণ শুরু হয়েছে। ডুমুরিয়া বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী পাউবোর জমি দখল করে পুনরায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
অবৈধভাবে এ সব স্থাপনার নির্মাণকাজ চললেও এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে ও সরেজমিনে জানা যায়, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খুলনার পওর শাখা-১ গত বছরের ১ ডিসেম্বর ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের দুধ বাজার থেকে পূর্ব দিকে মহিলা কলেজ মোড় এবং শালতা নদীর ওপর সেতু পর্যন্তসহ বিভিন্ন পয়েন্টে অবৈধভাবে দখল করা সরকারি জমি উদ্ধারের লক্ষ্যে ৮৬টি বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনা তালিকা প্রস্তুত করে অভিযান শুরু করে। প্রায় পৌনে ২ বছর বন্ধ থাকার পর আবারও অভিযান শুরু হয়। দুই দিনে আংশিক স্থাপনা উচ্ছেদ করে অভিযান আবারও স্থগিত করা হয়।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমিতে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ করা একটি চলমান প্রক্রিয়া হলেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সারা দেশে একযোগে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু করে। এরই অংশ হিসেবে ডুমুরিয়ায় উপজেলায় ২০২০ সালের ১২ মার্চ এ অভিযান শুরু করা হয়। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। পরে গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে আবার নতুন করে অভিযান শুরু করা হয়। দুই দিনে তালিকাভূক্ত ৮৬টি দোকান, বাসাবাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ স্থাপনার মধ্যে ৬০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তৎকালীন ডেপুটি রেভিনিউ কালেক্টর ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নয়ন কুমার রাজবংশী এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ ছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা ও থানা-পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সার্বিক সহযোগিতা করেন।
এদিকে উচ্ছেদ অভিযানের তিন মাস যেতে না যেতেই ডুমুরিয়া বাজারের মুদি দোকানি মফিজ গাজী, লেদ কারখানা মালিক লুৎফর শেখ, অপু শেখ, হেদায়েত কাজী, মিষ্টি দোকানি অর্জুন পাল, খুরশীদ আলম, মহেন্দ্র পালসহ আরও কয়েকজন ব্যক্তি দুধ বাজারের পাশে পুনরায় তাঁদের স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উল্লেখিত ব্যবসায়ীরা জানান, তাঁরা যুগ যুগ ধরে ওই জমিতে দোকান নির্মাণ করে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। উচ্ছেদ করার পর তাঁরা বেকার হয়ে পড়ায় পুনরায় অস্থায়ী ভিত্তিতে আবারও ব্যবসা শুরু করেছেন। উচ্ছেদের পর তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হলে তাঁরা এমনটি করতেন না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডুমুরিয়া সদর এলাকায় দায়িত্বরত এসও হাসনাতুজ্জামান বলেন, ‘অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ওই সব জমি ঘিরতে বেড়া দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু কার্যক্রম পরিচালনা করতে একটু সময় লাগছে।’
হাসনাতুজ্জামান আরও জানান, যদি কোনো ব্যক্তি পুনরায় পাউবোর জমি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে থাকেন তাহলে তিনি যতই প্রভাবশালী হন না কেন তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।