কিশোরগঞ্জের হাওরের ধনু ও বাউলা নদীর পানি বেড়েছে। ইতিমধ্যে ইটনা হাওরে নদীর অববাহিকায় দুইশো একর বোরো ধানের জমি প্লাবিত হয়েছে। এসব জমি থেকে কাঁচা-পাকা ধান কেটেছেন কৃষক। হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধের এখনো ক্ষতি না হলেও রয়েছে হুমকির মুখে। তবে বাঁধের ঝুঁকিপুর্ন স্থানগুলো মেরামতের কাজ করছে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভারতের আসামের চেরাপুঞ্জিতে অতিরিক্ত বৃষ্টি হওয়ায় উজান থেকে পানি নেমে আসছে। নদী অববাহিকার বোরো জমি প্লাবিত হয়েছে পাহাড়ি ঢলে। তবে মূল হাওরে পানি ঢুকেনি এখনো। কিন্ত আগাম বন্যার শঙ্কায় এখন ঘুম নেই কৃষকের চোখে। স্বপ্নের ফসল বাঁচাতে রাতেও হাওর রক্ষা বাঁধে কাজ করছেন কৃষকেরা। কদিন ধরেই দিন-রাত পরিশ্রম করছেন পালা করে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকরা নিজ উদ্যোগেই বাঁধ মেরামত করার কাজে দিন-রাত ব্যস্ত।
ইটনা হাওরের কৃষক তমিজ উদ্দিন বলেন, ‘হাওরের মানুষের একমাত্র ফসল বোরো ধান। অসময়ে পাহাড়ি ঢল আসায় আমরা এখন আতঙ্কে আছি। দিন-রাত পরিশ্রম করছি বাঁধ আরও মজবুত করার জন্য। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসন আমাদের বিভিন্নভাবে সাহায্য করে যাচ্ছেন। পানি এখনো হাওরে ঢুকেনি। তবে অনবরত উজানের ঢল আসতে থাকলে আমাদের সব শেষ হয়ে যাবে।’
জেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাওরে এ বছর ১ লাখ ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। হাওয়ের মানুষের সারা বছরের খোরাক আসে এই বোরো ধান থেকে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মতিউর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এলাকাবাসী ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ফসল রক্ষা বাঁধের সার্বক্ষণিক তদারকি করছি আমরা। আগাম বন্যা হওয়ার কোন পুর্ভাবাস এখনো নেই। তবুও আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি।
এদিকে, কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম গতকাল মঙ্গলবার বাঁধের ঝুঁকিপুর্ন স্থানগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ইটনা হাওরের নদী অববাহিকার বোরো জমিগুলো ইতিমধ্যে উজানের ঢলে প্লাবিত হয়েছে। মূল হাওরে যেন পানি না ঢুকতে পারে, সে বিষয়ে আমরা সার্বক্ষণিক তদারকি করছি। নদী মোহনা এলাকায় বাঁধের যেসব স্থানগুলো ঝুঁকিপুর্ন রযেছে, সেগুলোকে সর্বোচ্চ প্রধান্য দিয়েই কাজ করে যাচ্ছি আমরা।’