পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার বাণিজ্যিক কেন্দ্র কালাইয়া বন্দর। বন্দরের মূলঅংশ জুড়ে আছে আলোকী নদী। এ নদী দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজসহ বন্দরে ডাবল ডেকার, সিঙ্গেল ডেকার লঞ্চ, ট্রলার, কার্গো আসা-যাওয়া করত। সেই নদী এখন খালে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বন্দরের পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা নদীতে ফেলা ও নদীর দুই পাড় দখলের কারণে একসময়ের উত্তাল আলোকী নদী বর্তমানে দখলে-দূষণে খালে পরিণত হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, উত্তর-দক্ষিণমুখী তেঁতুলিয়া নদী থেকে পশ্চিম দিকে থেকে শাখা নদী হিসেবে কালাইয়া বন্দরের ভেতর দিয়ে বের হয়ে গেছে আলোকী নদী। এ নদীর প্রায় চার কিলোমিটারের কূল ঘেঁষে গড়ে উঠেছে বন্দরের পাইকারি ও খুচরা বাজার। রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তর ধান ও গরু-মহিষের সোমবারের হাট। এ হাটকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে শতাধিক আড়তদার বা কমিশন এজেন্ট প্রতিষ্ঠান।
বন্দরের প্রবীণ ব্যবসায়ী আব্দুল মালেক বলেন, একসময়ের উত্তাল আলোকী নদী এখন খালে পরিণত হচ্ছে। এ নদীতে বন্দরের পরিত্যক্ত ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে যেমন দুই পাড় ভরাট হয়ে যাচ্ছে; তেমনি দখলদারেরা নদীর পাড় দখল করে গড়ে তুলেছেন নানা স্থাপনা।
বাউফল পরিবেশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম সিদ্দিকী মাসুম বলেন, ২০ বছর আগেও এ নদী দিয়ে বন্দরের পণ্যবাহী জাহাজ প্রবেশ করত। এখন নদীর যে অবস্থা, জাহাজ তো দূরের কথা ছোটখাটো একটি কার্গো প্রবেশ করতে হলে নদীতে কখন জোয়ার আসবে সে অপেক্ষা করতে হয়। না হয় কার্গো থেকে পণ্য খালাস করে ছোট নৌকায় বন্দরে নিয়ে আসতে হয়। এ কারণে বন্দরের ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যেই আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।
কালাইয়া বন্দর আড়তদার সমিতির সভাপতি বলেন, ‘দ্রুত সময়ের মধ্যে আলোকী নদী দখলদারদের উচ্ছেদ করে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নদীর গতিপথ আগের মতো ফিরে আসুক, সেই দাবি করছি।’
পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কাইছার আলম বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই আলোকী নদীর নব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল আমিন বলেন, নদীর দুই পাশে যে দখলদারেরা রয়েছেন, তাঁদের উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।