হোম > ছাপা সংস্করণ

বরিশালের আড়তে মৎস্যজীবী লীগ নেতার খাজনা-জুলুম বহাল

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

সাত বছর ধরে বরিশালের বৃহত্তম মাছের মোকাম নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ইজারাদার ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল। তাঁর সময়ে মোকামে প্রতি মণ ইলিশের খাজনা দিতে হতো ৭০০ টাকা। ২০২৩ সালের জুনে সিটি নির্বাচনের পর পোর্ট রোড মৎস্য অবতারণ কেন্দ্র দখলে নেন মহানগর মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি খান হাবিব। তিনি মণপ্রতি খাজনা নির্ধারণ করেন ৫০০ টাকা। গত ৫ আগস্টের পর ছাত্ররা ওই খাজনা আরও কমিয়ে নির্ধারণ করেন ৩২০ টাকা। তবে গত বুধবার মৎস্য ব্যবসায়ীরা মণপ্রতি ইলিশে ৮০ টাকা খাজনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পোর্ট রোড মৎস্য মোকামে খাজনার চাপ পড়ছে ইলিশের দামে। এ কারণে সস্তায় ইলিশ কিনতে পারছেন না ভোক্তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে কীর্তনখোলাতীরের মাছঘাট, লঞ্চঘাট, খেয়াঘাট, বাজার সবই নিয়ন্ত্রণ করতেন আওয়ামী লীগ নেতা নিরব হোসেন টুটুল। কিন্তু ৫ আগস্টের পর তিনি গা ঢাকা দিলে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণে নেন শ্রমিক লীগ নেতা খান হাবিব। তাঁর ভাই বিএনপির নেতা খান কামালের নেতৃত্বে খাজনার জুলুমে অতিষ্ঠ মৎস্য ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান, সেনাবাহিনী ও জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। সর্বশেষ গত বুধবার ব্যবসায়ীদের বৈঠকে মণপ্রতি ইলিশের খাজনা ৮০ টাকা নির্ধারণ করে মাইকিং করেছে বরিশাল মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশন।

বরিশাল সদর থানা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও মৎস্যজীবী দলের নেতা কামাল সিকদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএর ল্যান্ডিং শিপিং চার্ট অনুযায়ী প্রতি টন পণ্যের খাজনা (শুল্কহার) ৩৪ দশমিক ৫০ টাকা। কিন্তু সর্বশেষ প্রতি মণে ৩২০ টাকা নেওয়া হতো। সেই হিসাবে, এক টন ইলিশে খান হাবিব খাজনা তুলতেন ৮ হাজার টাকা। এত চড়া খাজনা নেওয়ায় পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে জেলেরা মাছ আনা বন্ধ করে দিয়েছেন।’

কামাল সিকদার আরও বলেন, গত বুধবারের সভায় মৎস্য ব্যবসায়ীরা মণপ্রতি ইলিশে ৮০ টাকা খাজনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ওই হারে খাজনা দেওয়ায় এখন জেলেরা লাভবান হচ্ছেন। এতে ইলিশের মাছের দামও কমে আসবে।

তবে বরিশাল পোর্ট রোড মৎস্য মোকামের ইজারাদার খান হাবিব আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিগত সাত বছর ইজারাদার নিরব হোসেন টুটুল মণপ্রতি ইলিশে খাজনা নিতেন ৭০০ টাকা। আমি এসে করেছি ৫০০ টাকা। ব্যবসায়ীরা মণপ্রতি ইলিশে খাজনা ৮০ টাকা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই আর খাজনা তুলছি না।’ বিআইডব্লিউটিএ যদি মাছের খাজনা নির্ধারণ করে দিত, তাহলে এমনটা হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

খান হাবিবের নিয়ন্ত্রণে লঞ্চ টার্মিনাল, কাঁচাবাজারও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বরিশাল নৌবন্দরের দোতলা লঞ্চঘাটও ইজারা নিয়েছেন খান হাবিব। সেখানেও একইভাবে বাড়তি খাজনা আদায় করা হচ্ছে পণ্য আনা-নেওয়ায়। ঘাটে প্রবেশ করতেও গুনতে হয় টাকা।

নৌযাত্রী ঐক্য পরিষদের বরিশালের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ নিলু বলেন, ‘লঞ্চঘাটে প্রবেশের জন্য টাকা নেওয়ার প্রথা অন্যায়। পৃথিবীর কোথাও টার্মিনালে প্রবেশে টাকা লাগে না। বরিশাল বন্দরে এই জুলুমবাজি হচ্ছে বিআইডব্লিউটিএর শেল্টারে।’

জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক আজকের পত্রিকাকে বলেন, মাছ বাজারের লোকজন সম্প্রতি বাড়তি খাজনা উত্তোলনের অভিযোগ করেছেন। খাজনার নামে জুলুমবাজি চলবে না।

এসব বিষয়ে জানতে বরিশাল বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাসকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি। তবে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘাটের খাজনার বিষয় আমাদের কিছু করার নেই। তবে খাজনা বাড়লে মাছের দামে কিছুটা তো প্রভাব পড়েই।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন