বালাগঞ্জ উপজেলার হাওর-বিলে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় বোরো খেতে সেচ সংকটের আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। বোরো চাষ শুরু হওয়ার আগেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তাঁরা।
ইজারাদারেরা ইচ্ছেমতো হাওরের পানি সেচ দেওয়ার কারণে অসময়ে শুকিয়ে গেছে তেলশা নদী ও দীঘির খাড়ার খাল। এ কারণে সেচ সংকটে ছোট চাতল, বড় হাওর, বেরাঘাঘটিয়া হাওর ও খাড়ারপাড় খালের আশপাশে অধিকাংশ জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দেওয়ানবাজার ইউনিয়নের চাম্পারকান্দি, নিজগহরপুর, দত্তপুর, কালিমানজী গ্রামসহ প্রায় ১০-১২টি গ্রামের কৃষকেরা বেরাঘাঘটিয়া হাওরের জমিতে বোরো আবাদ করে আসছেন যুগের পর যুগ। এই হাওরের অধিকাংশ জমি চাষাবাদে দিঘীর খাড়ার খাল ও তেলশা নদী থেকে সেচ দেওয়া হয়। কিন্তু এই খাল আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় এবার অনেক জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা করছেন কৃষকেরা।
এলাকার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি বছর বেরাঘাঘটিয়া হাওর সংলগ্ন জান মোহাম্মদ খাল ও ছোট চাতল-খাড়ার খালে বাঁধ নির্মাণ করে পানি আটকানো হতো। ফলে শুষ্ক মৌসুমে তেলশা নদী ও দীঘির খাড়ার খালে পর্যাপ্ত পানি থাকত। এই নদী ও খাল থেকে সেচের চাহিদা মেটানো যেতো। এ বছর এই খালগুলোতে ছোট করে বাঁধ নির্মাণ করায় হাওরের পানি নেমে গিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া ছোট চাতল-খাড়ার খালের বাঁধের নিচে ৫ ইঞ্চি পাইপ বসিয়ে বিল ইজারাদারেরা পানি সেচ দিচ্ছেন। এতে করে হাওরের উজান দিকের নদী-খাল শুকিয়ে গেছে। এভাবে পানি সেচ দেওয়া অব্যাহত থাকলে বেরাঘাঘটিয়া হাওরের আশপাশের জমিতে বোরো চাষাবাদ করা সম্ভব হবে না। বোরো ফসল উৎপাদনে বেরাঘাঘটিয়া হাওরের পানি সেচ বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃষকেরা জোর দাবি জানিয়েছেন। এদিকে, পরিদর্শনকালে ইজারাদারদের নিজেদের প্রয়োজনে হাওরের পানি সেচ দেওয়ার সত্যতা মিলেছে।
বালাগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, ‘পানি সেচের বিষয়টি কেউ আমাকে জানায়নি। পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
