২২ দিন ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ ছিল। এতে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে এখন যেসব ইলিশ ধরা পড়ছে সেগুলোর বেশির ভাগই ডিম ছেড়েছে। ২০১৭ সালে ইলিশ অঞ্চলভুক্ত হয় কুড়িগ্রাম। এই জেলায় সচরাচর ইলিশ না মিললেও নিষিদ্ধ সময়ের পরে এখানকার নদ-নদীতে বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র নদে ইলিশের দেখা মেলে। আহরণ নিষিদ্ধ সময়ে ভাটির নদ-নদীতে জাল ফেলা বন্ধ থাকায় উজানের দিকে আসার সুযোগ পায় ইলিশ মাছ। এ কারণে সম্প্রতি জেলায় মাছটির বিচরণ বেড়েছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় জেলার উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট বাজারে ইলিশ বিক্রি করতে আসা নুরনবী বলেন, ‘আইজ (শনিবার) সন্ধ্যায় ২৫ কেজি ইলিশ বেচছি। সব মাছের সাইজ মোটামুটি বড়। ১ কেজি ৪০০ গ্রাম পর্যন্ত ওজন আছিল। কিন্তু এই মাছে ডিম আছিল না। এই কদিনে বেশির ভাগ মাছ ডিম ছাড়ছে।’
নুরনবী আরও বলেন, ‘কয়েক দিন নদীতে প্রশাসন আছিল। তখন নৌকা আছিল কম। অহন নদীতে সবাই নামছে। এ জন্য নৌকাপ্রতি ইলিশ কম। আগে দুই-তিন নৌকায় যে ইলিশ মিলছে দুই দিন থাইকা সেটা ৫-৭ নৌকা মিলে জড়াইতে হয়। তয় ইলিশের সাইজ ভালো।’
রোববার সকালে কথা হয় উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের জেলে আছির উদ্দিনের সঙ্গে। আছির উদ্দিন বলেন, ‘ইলিশ পাওয়া যাইতাছে। গতকাইল (শনিবার) থাকি নদীতে পানি একটু বাড়ছে। এ জন্য মাছ একটু কম পাইছি। কিন্তু ইলিশ পাওয়া যাইতাছে।’
মৎস্য বিভাগ জানায়, ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরা সরকারের নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই সময়ে কুড়িগ্রামের নদ-নদীতে পরিচালিত অভিযানে ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৪০০ মিটার নিষিদ্ধ জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এসব জালের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, ‘চলতি বছর ব্রহ্মপুত্রে ইলিশের বিচরণ তুলনামূলক বেড়েছে। ২২ দিনের অভিযানে আমরা যেসব ইলিশ জব্দ করেছি, খুবই কম মা ইলিশ পাওয়া গেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই ছিল ডিম ছেড়ে দেওয়া। তবে এমনও ইলিশ পাওয়া গেছে যেগুলো এখনো ডিম ছাড়েনি। মা ইলিশ এই ২২ দিনের আগে ও পরে ডিম ছাড়তে পারে। তবে গবেষণা বলছে, এই ২২ দিন ডিম ছাড়ার প্রধান সময়। এর মানে বেশির ভাগ মা ইলিশ এই সময়ে ডিম ছাড়ে।’