Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

মহাসড়কের বিভাজকের ওপর অবৈধ বাজার

দেলোয়ার হোসাইন আকাইদ, কুমিল্লা

মহাসড়কের বিভাজকের ওপর অবৈধ বাজার

দুই পাশে ব্যস্ত মহাসড়ক। মাঝখানে বিস্তৃত জায়গাজুড়ে বিভাজক। আর সেখানেই গড়ে ওঠে সবজির আড়ত ও দোকান। এক-দুটি নয়, অন্তত অর্ধশত। মহাসড়কের মাঝখানে এসব অবৈধ স্থাপনা গড়ে উঠেছে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়নে। সওজের জায়গায় গড়ে তোলা এসব দোকানের নিয়ন্ত্রণ স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাতে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে নামমাত্র উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও দু-এক দিনের মধ্যে ফের গড়ে ওঠে এসব স্থাপনা। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, উচ্ছেদ স্থায়ী না হওয়ার মূল কারণ এ বাজারের চাঁদা ভাগ হয় সব মহলে।

মহাসড়কের বিভাজকে যেসব স্থাপনার কথা বলা হচ্ছে এর পাশেই রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ তরকারির আড়ত নিমসার বাজার। সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, নিমসার বাজারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মিশন স্কুল সড়কের প্রায় ১৩ শতক ভূমি। পরে বাজারটি চারদিকে ছড়িয়ে যায়। যে যার মতো দখল করে নেয় মহাসড়কের দুই পাশের জমি। সওজের জায়গা দখল করে তৈরি করা হয়েছে দোকানকোঠা। এই দখল প্রতিযোগিতা থেকে রেহাই পায়নি সড়কের মাঝখানের লেনও।

কথা হয় সড়ক বিভাজকের ওপর গড়ে ওঠা দোকানের ভাড়াটিয়া সামিয়া এন্টারপ্রাইজের দুলাল হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, ১২ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে এ দোকান নিয়েছেন। মাসে ভাড়া দেন ১২ হাজার টাকা।

সফিক বাণিজ্যালয়ের সফিক মিয়া বলেন, ‘১০ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে দোকান ভাড়া নিয়েছি। দোকানের কোনো কাগজপত্র দেওয়া হয়নি। সরকারি জায়গার কাগজ পাবে কোথায়? অন্য কেউ আরও বেশি অগ্রিম দিলে যেকোনো মুহূর্তে আমাদের উঠিয়ে দিতে পারে। তারপরও ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছি। তা ছাড়া প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযানের ভয় তো আছেই।’

আরেক দোকানি সুমন মিয়া বলেন, এ বাজারে যার প্রভাব বেশি তার রোজগার বেশি। দখলও বেশি। সড়কের লেনসহ দুই পাশ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
চা-দোকানি নিতাই সরকার বসেছেন সড়কের মাঝ লেনে। তাঁকেও প্রতিদিন ৪০-৫০ টাকা করে দিতে হয় বলে জানান।

এভাবে মহাসড়কের বিভাজক দখল করে অবৈধ স্থাপনা গড়ে তোলা প্রভাবশালী কারা—এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চাইলে কোনো দোকানি নিজ পরিচয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, মহাসড়কে সওজের জায়গা নিয়ন্ত্রণ করেন বুড়িচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক, আবদুস সালাম, রুহুল আমিন, শাহীন, মাছুম, আব্দুল কাদের জিলানী, ছাত্রলীগ নেতা সবুজসহ প্রায় ১০-১৫ জন।

অভিযোগের বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। সড়কের কাজের পর অব্যবহৃত জমিতে দোকান তুলে স্থানীয় লোকজনকে ব্যবসা করতে দেওয়া হয়েছে। সওজের প্রয়োজনে জমি ছেড়ে দেব।’

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মোকাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহেব আলী বলেন, ‘সরকারিভাবে এ বাজারের ইজারার ডাক হয় ১৩ শতক ভূমি। কিন্তু বাজারটি প্রায় ২০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। যে যার মতো করে দখল করছে। বাজারটি এবার ইজারা হয়নি। কে চালায়, কীভাবে চালায়, কিছুই জানি না। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর ভূমিকা প্রয়োজন।’

অবৈধ দখল উচ্ছেদের বিষয়ে কথা হলে সওজ অধিদপ্তর কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা ও বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হালিমা খাতুন বলেন, মহাসড়কে সওজের জায়গা উদ্ধারে বেশ কয়েকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। পরে আবার দখল করা হয়। বিভিন্ন জটিলতার কারণে বাজারটি এবার ইজারা দেওয়া হয়নি। এ বাজার থেকে খাস কালেকশন করা হচ্ছে। বাজারের বাইরে সওজের জায়গায় অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে শিগগির বড় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ