
খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের পাশের গাছ লুটের কৌশল হিসেবে ছাল তুলে মেরে ফেলছে একটি চক্র। সড়কের দুই পাশের কোটি কোটি টাকার গাছ অবাধে কাটার সুযোগ না পাওয়ায় এই কৌশল নিচ্ছে চক্রটি। ইতিমধ্যে সড়কের খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলা অংশে গাছের গোড়া কেটে, ছাল তুলে নেওয়ায় শতাধিক গাছ মরে গেছে।
সড়ক ও জনপদ (সওজ) অফিসের তথ্যসূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের প্রায় ২৬ কিলোমিটার অংশ আছে মানিকছড়ি সওজের নিয়ন্ত্রণে। সড়কের জায়গায় দুই পাশে কয়েক হাজার সেগুন, কড়ই, রেইন্ট্রি কড়ই, আকাশি, গামারিসহ মূল্যবান গাছ রয়েছে। বেশির ভাগ গাছের বয়স ৫০ বছরের বেশি। ফলে এসব মূল্যবান গাছ রাতের আঁধারে একটি চক্র কেটে নিচ্ছে।
গতকাল বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, তিনটহরী আনসার ক্যাম্পের দক্ষিণে বর্ণমালা স্কুলের সামনে রাস্তাঘেঁষা কয়েকটি আকাশি গাছ কেটে নিয়েছে বনখেকোরা। গচ্ছাবিল মনাইয়ার দোকানের উত্তরে পিসি তাহেরের বাড়ির সামনের ৮-১০টি ৫০ বছরের সেগুনগাছের মধ্যে ৪-৫টির গোড়ার ছাল তুলে নিয়ে গেছে। এতে গাছগুলো মরা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে একটি কড়ই গাছ মরে গেছে। অরক্ষিত অংশে থাকা মূল্যবান সরকারি এই গাছ এভাবে কেটে নেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা সওজ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী আবু মোহাম্মদ ভুট্টো বলেন, ‘ইতিমধ্যে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত ও বনখেকোরা তিনটহরী আনসার ক্যাম্পের অদূরে সড়কের কিছু গাছ কেটে নিয়েছে। এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। তবে সেগুন, কড়ইগাছের গোড়ার ছাল কেটে নেওয়ার বিষয়টি জানা ছিল না। খতিয়ে দেখে এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হবে।’
উপজেলার গাড়ীটানা বনবিভাগের রেঞ্জার উহ্লামং চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বনসম্পদের ওপর কুচক্রী মহলের নজর পড়া দুঃখজনক। সাপমারা-যোগ্যাছোলা সড়কের বেশকিছু গাছ এভাবে কেটে নিয়েছে একটি চক্র। তাদের বিষয়ে সঠিক তথ্য বা সাক্ষী না থাকায় ব্যবস্থা যাচ্ছে না।’
গাড়ীটানা বনবিভাগের রেঞ্জার বলেন, ‘গোড়ার ছাল কেটে গাছ মেরে ফেলার ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত। এদের চিহ্নিত করা জরুরি। সড়কের পাশে থাকা লোকজন এগিয়ে এসে তথ্য দিলে এদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা বন আইনে মামলা করতে পারেন। নয়তো সড়কের সৌন্দর্য রক্ষায় থাকা মূল্যবান গাছ এভাবে বিলীন হবে।’