মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
কমলগঞ্জের মাগুরছড়া পুঞ্জিতে নৃতাত্ত্বিক খাসি জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠান হয়। এ অনুষ্ঠানের নাম ‘খাসি সেং কুটস্নেম’।
আলোচনাসভা, খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এ বছর আয়োজন করা হয় ১২তম বর্ষবিদায় ও ১২৩তম বর্ষবরণের। প্রাচীন খাসি সমাজে দেবতার প্রতি সন্তুষ্টি প্রকাশে এ উৎসব পালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যবাহী পোশাক পড়ে তরুণ তরুণীরা উপস্থিত হয়। সারা দিনব্যাপী চলে তাদের খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। উৎসবে তাদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্য উপস্থাপন করে। এ ছাড়া বড়শি দিয়ে মাছ ধরা প্রতিযোগিতা হয়।
উৎসবে অনেকগুলো স্টল বসে। স্টলে খাসিদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র উপস্থাপন করা হয়। মঞ্চ ও উৎসবের স্টলগুলো বাঁশ, কলাপাতা ও সুপারি পাতা দিয়ে সাজানো হয়। খাবারেও ছিল বৈচিত্র্য, জাতিগোষ্ঠীর লোকজন ছাড়াও অতিথিদের জন্য কলাপাতায় মোড়ানো বিশেষ খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করে।
খাসি তরুণী সালভেশন বলেন, ‘আমাদের এ উৎসব মিলন মেলার মতো। উৎসবকে কেন্দ্র করে আমরা সবাই জড়ো হই। এ বছর করোনার কারণে উপস্থিতি কম। তারপরও আমরা সন্তুষ্ট।’
আদিবাসী রক্ষা আন্দোলনের নেতা ফিলা ফতমি জানান, খাসিরা দীর্ঘদিন ধরে সম্প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে। খাসিয়ারা প্রকৃতির পূজারি।
খাসি জনগোষ্ঠীর যুবনেতা সাজু মারচিয়াং জানান, খাসিয়াদের প্রাচীন ইতিহাস-ঐতিহ্য, সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য বর্ষবরণ ও বিদায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বৃহত্তর সিলেটে প্রায় ৮০ টির মতো খাসি পুঞ্জি রয়েছে।
উৎসবে খাসিদের পাশাপাশি এই অনুষ্ঠানে বাঙালি ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষসহ পর্যটকেরা অংশগ্রহণ করে থাকেন। তবে মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিদেশিরা উপস্থিত হতে পারেন নাই।
মাগুরছড়া পুঞ্জির মন্ত্রী ও খাসি সোশ্যাল কাউন্সিলের সভাপতি জিডিশন প্রধান সুচিয়াং বলেন, ‘এ বছর স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের ভাষা সংস্কৃতি নতুন প্রজন্ম যেন ভুলে না যায় সে লক্ষ্যে আমরা অধিক গুরুত্ব দিয়ে এই অনুষ্ঠান করে থাকি।’