Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

‘আরও ভালো থাকতাম চাই’

অর্চি হক, সাভার থেকে ফিরে

‘আরও ভালো থাকতাম চাই’

‘প্রতি বছরই বিজয় দিবসে এখানে আসা হয়। গতবার না আসতে পারায় মেয়েটার মন খারাপ ছিল। আর আজকে এখানে আসার জন্য ভোরে ঘুম থেকে উঠে বসেছিল মেয়েটা।’ বলছিলেন সাভারের বাসিন্দা মনির হোসেন। মেয়ে খুশবুকে নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ফুল দিতে এসেছিলেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে।

গতকাল ভোরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা জানানোর পর জাতীয় স্মৃতিসৌধ সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে শুরু করে।

গত বছর করোনার কারণে বিধিনিষেধ বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে জনসমাগম ছিল না। তবে এবার সেই আক্ষেপ পুষিয়ে নেন অনেকেই।

বন্ধুদের সঙ্গে স্মৃতিসৌধে আসা সাভার আদর্শ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তাসনিম আহমেদ বলে, ‘করোনার কারণে গত বছর ঘরবন্দী থাকতে হয়েছিল। বছরের একটি দিন আমাদের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর উপলক্ষ আসে। সেদিনও ঘরে বসে থাকলে নিজের কাছেই নিজে অপরাধী মনে হয়।’

সাভারের ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মিলনের হাত ধরে এসেছিল তাঁর ছোট্ট মেয়ে মিম। সদ্য কথা বলতে শিখেছে সে। আধো আধো কণ্ঠে সে শুধু বলছিল, ‘ভালোবাসি বাংলাদেশ।’

স্মৃতিসৌধে পতাকা ও রিস্টব্যান্ড বিক্রি করছিলেন শহিদুল ইসলাম। তিনি জানান, সারা বছর বাদাম-বুট বিক্রি করলেও ১৬ ডিসেম্বর আর ২১ ফেব্রুয়ারির আগে লাল সবুজ রিস্টব্যান্ড ও পতাকা বিক্রি করেন তিনি। বিজয় মানে কী, জানতে চাইলে শহিদুল বলেন, ‘বিজয় মানে হইলো সুখে-শান্তিতে থাকা। ভালো থাকা।’ বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে তাঁর প্রত্যাশা আরও ভালো থাকা। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন দেশে ভালো আছি, আরও ভালো থাকতাম চাই।’

বিজয়ের ৫০ বছরে সাভারের বাসিন্দা বীণা মিশ্রর চাওয়া ঘুষ-দুর্নীতিমুক্ত চাকরি। তিনি বলেন, চাকরি পেতে ঘুষ-দুর্নীতি হলে তরুণ সমাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর তরুণেরা ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেটা দেশেরও ক্ষতি।

ঢাকার ডা. সিরাজুল ইসলাম মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক মুশফিকা রহমানও এসেছিলেন শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে। তিনি বললেন, ‘৫০ বছরে দেশ তো অনেক এগিয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তিতে আমরা এগিয়েছি, অর্থনীতিতে এগিয়েছি। কিন্তু স্বাস্থ্য খাতে আমরা এখনো অনেক পিছিয়ে। এখানে আরও কাজ করতে হবে।’

বিজয় দিবসে আনন্দের পাশাপাশি আক্ষেপও শোনা গেল অনেকের কণ্ঠে। বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক মুজিবুর রহমান বললেন, ‘সবকিছু এখন শো-অফ (লোক দেখানো) হয়ে গেছে। সবাই এসে ফুল দেওয়ার ছবি তুলে ফেসবুকে আপ করতে ব্যস্ত। শ্রদ্ধা জানানোটা নয়, লোক দেখানোটাই যেন বড় কথা।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুরের ছবি তুলতে চাইলেও অনুমতি দিলেন না তিনি। বললেন, ‘ফুল দিতে এসেছি, ছবি তোলার কী আছে?’

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধ জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ফুলে ভরে ওঠে স্মৃতিসৌধের বেদি। তবে অব্যবস্থাপনার কারণে মানুষকে পড়তে হয় ভোগান্তিতে।

স্কুলছাত্রী সোনিয়া আর মুনিয়া দুই বোন, এবারই প্রথম এসেছিল স্মৃতিসৌধে। মুনিয়া বলল, ‘এত মানুষের ভিড়। ভালো ব্যবস্থাপনা থাকা দরকার ছিল। সবাই শুধু ধাক্কাধাক্কি করতেছে। কে যে কোন দিকে যাবে, নিজেরাও জানে না।’

এদিন ভোর থেকে ভিভিআইপি যাতায়াতের কারণে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যানবাহন ও মানুষের চলাচল বন্ধ করা হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিসৌধ ত্যাগ করার পর মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই স্মৃতিসৌধে ভিড় বাড়তে থাকে। তবে এ সময় কাউকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা যায়নি।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ