ঝালকাঠির কাঠালিয়ায় একটি জরাজীর্ণ ঘরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন (৬৭)। তিনি উপজেলায় শৌলজালিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শৌলজালিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার পিতার মনু মিঞা। তিনি কাঠালিয়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার। বিয়ে না করায় নেই পরিবারও। দীর্ঘদিন ধরে তিনি একটি জরাজীর্ণ ও বিদ্যুতবিহীন ঘরে বসবাস করছেন। ঘরে নেই কোনো জানালাও। প্রবেশের জন্য রয়েছে মাত্র একটি দরজা। দিনের বেলায়ও অন্ধকার ঘরে মশারি টানিয়ে বিশ্রাম নিতে হয় মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেনকে। এলাকাবাসী তাকে সাদা মনের মানুষ হিসেবে চেনেন।
জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে ছালে মিয়া বরগুনায় লেখাপড়াকালীন সময় ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভারতে গিয়ে নেন প্রশিক্ষণও। পরে সাব সেক্টর কমান্ডার মেহেদী হাসানের নেতৃত্বে বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেন।
এছাড়া ২৫-৩০ বছর পূর্বে একই এলাকার অসহায় নারী সাফিয়া বেগমকে (৬০) তার ঘরে আশ্রয় দেন মোয়াজ্জেম হোসেন। দুজনেই একই ঘরে ভাই-বোনের সম্পর্ক নিয়ে বাস করে আসছেন দীর্ঘদিন থেকে। সাফিয়া বেগম মানসিক প্রতিবন্ধী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, আমি উপজেলা কমান্ডার। এ উপজেলায় ১৪ জন মুক্তিযোদ্ধা রয়েছে। যাদের গৃহনির্মাণ অত্যন্ত প্রয়োজন। তাদের তালিকা দেওয়া হয়েছে এবং ১৪ জনের মধ্যে ১২ জনের নামে ঘর বরাদ্দ হয়েছে। উপজেলার এ সকল শ্রেণিভুক্ত মুক্তিযোদ্ধার ঘর নির্মাণের পরেই আমি ঘর চাইতে পারি, তার পূর্বে ঘরের জন্য নাম দেওয়া হলে নীতিবহির্ভূত হবে। মুক্তিযোদ্ধা নেতা হিসেবে ঘর চাওয়াটা আমার জন্য সমুচিত নয়।
এ ব্যাপারে শৌলজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ছালেকে একটি সরকারি ঘর দেওয়া হয়েছিল। সে ঘরটি তার ভাইয়ের ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা কিবরিয়া দখল করে নিয়েছে। সাফিয়া বেগম কোনো প্রকার ভাতার জন্য আমাদের কাছে আসেনি। তিনি চাইলে ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।