কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছেন শত শত দোকানি। এতে পৌর এলাকার ঘাঘরবাজরে তীব্র যানজট নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন অবস্থায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কে চলাচলকারী বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় শত বছর আগে ঐতিহ্যবাহী ঘাঘর বাজার গড়ে ওঠে। বর্তমানে এ বাজারটি ব্যবসা-বাণিজ্যে সমৃদ্ধ। শুধু কোটালীপাড়াবাসীই নয়, গোপালগঞ্জ জেলা সদরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ এ বাজারে কেনাকাটা করেন। ব্যবসাকেন্দ্র হিসেবে এ বাজারের সুনাম বহু আগের।
আরও জানা গেছে, সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য ঘাঘর বাজারের কাছাকাছি কোটালীপাড়া পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলা একটি মার্কেট নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বেচাকেনা কম হবে এমন শঙ্কায় ওই মার্কেটে যেতে চাচ্ছেন না ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। তাঁরা এখনো বাজারটির সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়তই বাজারের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। বাজারের মহুয়ার মোড় থেকে চৌরঙ্গী যেতে যেখানে সময় লাগত পাঁচ মিনিট, সেখানে যানজটের কারণে এখন সময় লাগছে প্রায় আধা ঘণ্টা। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন এলাকার রোগী, শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগণ ও বাজারে আসা ক্রেতারা।
কোটালীপাড়া উপজেলার দক্ষিণপাড়া গ্রামের নিবাসী বুলবুল আহম্মেদ হাজরা বলেন, ‘কিছুদিন হলো ঘাঘর বাজারের সড়ক দিয়ে চলাচলে খুবই কষ্ট হচ্ছে। ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা সড়কের ফুটপাত দখল করে দোকান নিয়ে বসেছেন। সড়কের দুপাশে দোকান বসালে সড়ক যত বড়ই হোক না কেন তা সংকুচিত হয়ে যায়। তার ওপর রয়েছে ভ্যান, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলের চাপ। সড়কের ওপর গাড়ি রেখে কেনাকাটা করেন অনেকে। সব মিলে এখন ঘাঘর বাজারের সড়কগুলোতে বিরক্তিকর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। শিগগিরই ফুটপাত দখলমুক্ত করে পৌর মার্কেটটি চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’
কোটালীপাড়া শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কার্তিক চন্দ্র বলেন, ‘ঘাঘর বাজারের ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি আধুনিক পৌর মার্কেট করে দিয়েছেন। কিন্তু ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা আধুনিক ওই মার্কেটে কেন যাচ্ছেন না তা আমি বুঝতে পারছি না। আমাদের দাবি প্রশাসন যেন দ্রুত সময়ের মধ্যে ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত করে।’
কুশলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সোনিয়া পারভীন বলেন, ‘ঘাঘর বাজারের ফুটপাতগুলো দখল হওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যে আমরা নারীরা ভিড়ের কারণে বাজারে প্রবেশ করতে পারছি না। এ বিষয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌর মেয়রের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’ এ বিষয়ে ফুটপাতের কয়েকজন ব্যবসায়ীর কাছে জানতে চাওয়া হলে তাঁরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
পৌর মেয়র হাজী মো. কামাল হোসেন শেখ বলেন, ‘ঘাঘর বাজারের যানজট কমাতে ও ফুটপাত দখলমুক্ত করতে আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়ে অনেকবার সভা করেছি। কিন্তু তাঁরা অদৃশ্য কারণে আধুনিক পৌর মার্কেটে যাচ্ছেন না। আমি ফুটপাতের সব ব্যবসায়ী ভাইদের পৌর মার্কেটে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।’