দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি
ভবনের পিলারে ফাটল ধরেছে। ছাদ ও দেয়ালের পলেস্তারা খসে ভেতরের ইট বেরিয়ে গেছে। সব কক্ষই ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যেই চলছে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণির পাঠদান। এতে ভবন ধসের বড় দুর্ঘটনার আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা। এদিকে বিদ্যালয়ে নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ রয়েছে।
এই অবস্থা কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার আশি বছরের পুরোনো গুনাইঘর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। উপজেলার গুনাইঘর উত্তর ইউনিয়নের গুনাইঘর বাজার-সংলগ্ন এলাকায় ১৯৪১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিদ্যালয়।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টি স্থাপনের অর্ধশত বছর পরে ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে একটি একতলা ভবন নির্মাণ করে এলজিইডি। এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এলজিএসপি-২ অর্থায়নে সাড়ে ৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ভবনের ছাদ সংস্কার করা হয়। কিন্তু মেরামতের কয়েক বছর না যেতেই ভবনটি পুনরায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. সোহাগ জানান, ‘বিদ্যালয়ে আমি লেখাপড়া করেছি। এখন আর আগের মতো লেখাপড়া হয় না। ভবনের দেয়াল, পিলারে ফাটল ধরেছে। কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
স্থানীয় বাসিন্দা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, জরাজীর্ণ ভবনে শিশুরা ক্লাস করছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও স্বাস্থ্যকর শৌচাগারের সংকট রয়েছে। প্রধান শিক্ষক নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসেন না বলে তাঁর অভিযোগ।
তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অবস্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাছিমা আক্তার বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কয়েক দফা লিখিত দেওয়ার পরও কাজ হচ্ছে না। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন জেনেও সেখানে ক্লাস নেওয়া হয়।’
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাবেরা সুলতানা বলেন, ‘বিদ্যালয়ের ভবনটি খুবই জরাজীর্ণ। এখানে বাচ্চারা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। ভবনটি ভেঙে দ্রুত সংস্কার করা না হলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরীফ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারিভাবে ভবনের জন্য লিখিত দেওয়া হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই নতুন ভবন বরাদ্দ হবে।’