ফরিদপুর ও বোয়ালমারী প্রতিনিধি
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার মাইজকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী পৌরসভার ওয়াপদার মোড় থেকে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের (সওজ) জমি দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, বোয়ালমারীর ওয়াপদার মোড় থেকে পুরোনো বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত সড়ক ও জনপথের জমি বিভিন্ন মানুষ পাকা ঘর নির্মাণ করে দখল করছে। সড়ক ও জনপথের জমি ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করা হয়েছে। সরকারি জমি দখলের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীকে বারবার মৌখিকভাবে জানানোর পরেও অদৃশ্য কারণে জমি দখলমুক্ত করার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, বোয়ালমারী ওয়াপদা মোড়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির একাংশ দখল করে আরসিসি পিলার করে পাকা ভবন নির্মাণ করছে আমেনা খাতুনের পরিবার।
স্থানীয় শাহজাহান মৃধা পিকুল বলেন, এসএ ১২০৪ দাগে জমি ২০ শতাংশ ছিল। ওই জমির মধ্যে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৭, আবজাল হোসেনের ৮, তাঁর (পিকুল) ২ ও আমেনা খাতুনের ৩ শতাংশ জমি ছিল। কিন্তু রেকর্ডের পর বিএস ৪২০৬ দাগে জমির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২ দশমিক ৭৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, এখানে অন্যদের জমির পরিমাণ ঠিক থাকলেও আমেনা খাতুনের জমির পরিমাণ বেড়ে হয়েছে ১০ শতাংশ। আর সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমি কমে হয়েছে ২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪ দশমিক ২৫ শতাংশ জমি আমেনা খাতুনের নামে অবৈধভাবে রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ফরিদপুর সড়ক বিভাগের সার্ভেয়ার শামিম আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে একটি দেওয়ানি মামলা রুজুর জন্য তাঁরা সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছেন। মামলাটি হলে অবৈধ দখলদারদের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে।
আমেনা খাতুনের এক ছেলে আজিজুল হক বোয়ালমারী পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিলর। অপর ছেলে আতিকুল হক পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর।
অভিযোগের বিষয়ে কাউন্সিলর আজিজুল হক বলেন, ‘সরকারি জায়গা (জমি) কমেনি, সঠিকভাবে মাপ হলে ১২০৪ দাগের জমির মালিকেরা ঠিকভাবে বুঝে পাবে। আমি কেন সরকারি জায়গা দখল করব?’
এ ছাড়া ওয়াপদা মোড় থেকে চৌরাস্তার দিকে এগিয়ে হাতের ডানে আল নুর চক্ষু হাসপাতালের পাশে পৌরসভার আবর্জনা দিয়ে সরকারি জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। হাসপাতালের সামনেও জলাশয় ভরাট করে রাস্তা নির্মাণ করেছে ওই চক্ষু হাসপাতাল। এর একটু সামনে চৌরাস্তা বাস স্টপেজ-সংলগ্ন বালু দিয়ে জলাশয় ভরাট করে প্রশস্ত জায়গায় ইট বিছানোর কাজ চলছে।
এভাবে জলাশয় ভরাটের ফলে ওই অঞ্চলে জলাবদ্ধতার শঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া চৌরাস্তার দক্ষিণ পাশে সড়ক ও জনপথের জমির একাংশ দখল করে আমিরুল ইসলাম চৌধুরী ও ছিদ্দিকুর রহমান বহুতল ভবন নির্মাণ করেছেন।
ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ইমরান ফারহান বলেন, বিষয়টি তাঁরা অবহিত আছেন। শিগগিরই ব্যবস্থা নেবেন। জেলা প্রশাসককে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছেন। তিনি ম্যাজিস্ট্রেট দিলেই তাঁরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবেন।