তাঁর এক ভক্ত গতকাল আজকের পত্রিকার ফেসবুক লাইভে জানিয়েছিলেন, খেলা দেখতে সুদূর কুমিল্লা থেকে এসেছেন। গতকাল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে রানের খাতা খোলার আগেই বিব্রত চেহারায় লিটন দাস যখন ড্রেসিংরুমে ফিরছিলেন, নিশ্চিত সেই ভক্ত হতাশায় ডুবে গেছেন। লিটনের রানখরা চলছে, তাঁর দলও হেরেছে ৮ রানে।
এবারের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্ট’ বাক্যটা যেন এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত। নেতৃত্বের কৌশল এবং ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স—দুটিতেই হয়তো বেশ ভালো অনুধাবন করার কথা সিলেট স্ট্রাইকার্সের।
চোট-জর্জর শরীর, নিজের হতাশাজনক পারফরম্যান্স—সব মিলিয়ে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা কতটা স্বতঃস্ফূর্ত সময় পার করছেন, তিনিই ভালো জানেন! দল যে ৫ ম্যাচ খেলেছে, সব কটিতেই হেরেছে তাঁর দল। ৫ ম্যাচে বোলিং করেছেন ৩ টিতে, উইকেট পেয়েছেন মাত্র ১টি। তাঁর রান ৮।
বিপিএলের চারবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ইমরুল কায়েসকে সরিয়ে এবার লিটনের ওপর নেতৃত্বের আস্থা রেখেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। ব্যাট হাতে ৪ ম্যাচে ৩৫ রান করেছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। গড় ৮.৭৫, স্ট্রাইকরেট ৮৭.৫০। দল দুটি করে জয় ও হার দেখেছে। গতকাল রংপুরের দেওয়া ১৬৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৫৭ রানে থেমে যায় কুমিল্লার ইনিংস। ০ রানে আউট হয়ে ব্যর্থতার শুরুটা লিটনকে দিয়েই হয়েছিল। মজার ব্যাপার, নেতৃত্বে না থাকায় ইমরুল বরং নির্ভার মনে খেলার সুযোগ পেয়ে এরই মধ্যে দুটি ফিফটির দেখা পেয়ে গেছেন।
দেশি-বিদেশি মিলিয়ে রীতিমতো তারকার হাট বসিয়েছিল ফরচুন বরিশাল। তবে তামিম ইকবালের অধিনায়কত্বে এ পর্যন্ত ৫ ম্যাচের তিনটিতেই হেরেছে তারা। গতকাল জয়ের ধারায় ফিরলেও তামিমের কাছে এখনো বড় ইনিংস পাওনা বরিশালের। গতকাল ২ রান করলেও আগের ৪ ম্যাচে ভালো শুরু করেছেন। কিন্তু ইনিংসের পূর্ণতা পায়নি। এখনো তামিমের নামের পাশে ফিফটি যোগ হয়নি।
লোয়ার মিডল অর্ডার থেকে মিডল অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের ব্যাটেও রানখরা। ৫ ম্যাচে তাঁর ৭৫ রান। স্ট্রাইকরেটও আকর্ষণীয় নয়—১১৫.৮৭। যদিও বিপিএলের ফেবারিট দলটি এখন পর্যন্ত ৫ ম্যাচে ৩ জয় ও ২টি হার দেখেছে। সাকিব-সোহানদের ব্যর্থতায় বিদেশিরাই সেখানে ভূমিকা রাখছেন। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স যেমনই হোক, দলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নই যেন তাঁদের মূল কাজ। গতকাল কুমিল্লার বিপক্ষে জয়ের পর নিজের ভূমিকা নিয়ে সোহান বললেন, ‘আমার কাছে দল প্রথম। একেক দলের বিপক্ষে আমাদের বোলিং পরিকল্পনা একেক রকম। ওটাই আসলে আমরা করার চেষ্টা করছি।’
ব্যর্থ অধিনায়কদের ভিড়ে ব্যতিক্রম শুধু খুলনা টাইগার্সের এনামুল হক বিজয়। ৪ ম্যাচে ২ ফিফটির সৌজন্যে ৬৫ গড়ে করেছেন ১৩০ রান, স্ট্রাইকরেট ১২১.৪৯। তাঁর দলও আছে টেবিলে সবার ওপরে। পারফরম্যান্স ও নেতৃত্ব—সব মিলিয়ে ব্যতিক্রম বিজয় এখন পর্যন্ত ‘লিডিং ফ্রম দ্য ফ্রন্টে’র যথার্থ উদাহরণ এবারের বিপিএলে।