মাদারীপুর প্রতিনিধি
মাদারীপুরের প্রায় অর্ধশত ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। আবার কোনো কোনো ইটভাটার ভেতরেই কাজের সুবিধার জন্য করাতকল বসিয়ে কাঠ কাটা হচ্ছে। এদিকে জেলার ইটভাটাগুলোয় প্রায়ই ভ্রাম্যমাণ অভিযানে জরিমানা করলেও থামছে না কাঠ পোড়ানো।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেরচর এলাকার আড়িয়াল খাঁ নদীর পাশে কেএইসবি ব্রিকস, একই এলাকায় ব্যাপারী ব্রিকস, জেএসবি ব্রিকস, এমএমবি ব্রিকস, এমআরকে ব্রিকসসহ জেলার প্রায় অর্ধশত ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ।
যেখানে জ্বালানি হিসেবে কয়লা ব্যবহার করার কথা ছিল। এ ছাড়াও মাদারীপুরের ঘনবসতির এলাকার মধ্যে ইটভাটা নির্মাণ নিষিদ্ধ থাকলেও মানছে না অনেকেই। এসব অধিকাংশ ইটভাটার নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। কোথায়ও আবার ইটভাটার ভেতরেই করাতকল বসিয়ে কাঠ কাটা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেএসবি ব্রিকসসহ একাধিক ইটভাটায় করাতকল বসানো হয়েছে, যা দিয়ে সহজে কাঠ কেটে ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে। অথচ সম্প্রতি ১০টি ইটভাটায় কাঠ পোড়ানোর দায়ে সাড়ে ২৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ফরিদপুর পরিবেশ অধিদপ্তর ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এরপরও একইভাবে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।
এদিকে সাংবাদিক বা প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেলে অফিসে তালা দিয়ে ইটভাটার কর্মকর্তারা সটকে পড়েন। ফলে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় না। অপরদিকে ইটভাটার মালিকপক্ষের কাউকে ফোন দিলে তাঁরা সাংবাদিক পরিচয় পেলে কথা বলতে রাজি হন না।
মাদারপুরের পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অব নেচারের নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ বলেন, ‘মাদারীপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের কোনো অফিস নেই। তাই ফরিদপুর থেকে কর্মকর্তারা এসে ইটভাটাগুলোয় মাঝে মাঝে অভিযান চালিয়ে জরিমানা করেন। তাঁরা চলে গেলেই ইটভাটাগুলোয় শুরু হয় একই ধরনের কার্যক্রম। এভাবে ইটভাটায় কাঠ পোড়াতে থাকলে একটা সময় গাছের সংকট দেখা দেবে।এতে পরিবেশের ওপর চরম বিপর্যয় নেমে আসবে। তাই সবার সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আরও জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে।’জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ‘জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে অর্ধশত ইটভাটা আছে। ফরিদপুর পরিবেশ
অধিদপ্তর ও মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বারবার ওই সব ইটভাটায় অভিযান চালান। আর অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে
ও গাছ পোড়ানোর ব্যাপারে অভিযান চলমান রয়েছে।’