শেষ রাতের ঠান্ডা ভাব আর ভোরের শিশির যেন শীতের আবহ এনে দিয়েছে বরিশালে। শীত নিবারণের জন্য প্রস্তুতিও চলছে নানাভাবে।
সন্ধ্যা নামতেই নগরের ফুটপাতে শীত ঠেকাতে গরম কাপড় কেনাবেচার তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে নিম্নমধ্যবিত্তদের। কোথাও কোথাও চলছে শীতের পিঠা কেনাবেচা। শীতের সবজিও উঠেছে বেশ। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, তাপমাত্রা কমে শীতের দাপট ক্রমেই বাড়বে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরিশালের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. মাসুদ রানা রুবেল বলেন, গতকাল রোববার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন শনিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৮.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। একইভাবে শুক্রবার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৩১.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ মাসুদ রানা বলেন, ‘এখন ধীরে ধীরে তাপমাত্রা নামছে। আমরা উত্তরের বাতাস পাব। এতে তাপমাত্রা আরও কমবে। যেহেতু মৌসুমি বায়ু নেই, সেহেতু শীতের বাতাস আসছে। সামনে যত দিন যাবে তত শীতের দাপট বাড়বে। ফলে রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পাবে।’
তিনি বলেন, এখন থেকে ভোরের দিকে উন্মুক্ত স্থানে কুয়াশা দেখা দিতে পারে। এর ফলে চোখের দৃষ্টিসীমা ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত ১৫০০ মিটার অথবা ২০০০ মিটারের নিচেও নামতে পারে। এ জন্য লঞ্চ চলাচলেও সতর্ক হতে হবে।
সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রামের চাষি কেরামত আলীর লালশাক হয়েছে। শিম, টমেটো, পালংশাকের চারা বড় হচ্ছে। কেরামত জানান, ভোরে শিশির পড়ছে। তাই সিত্রাংয়ের ক্ষত কিছুটা কাটিয়ে ওঠা যাবে।
বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, জেলায় ১ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ হয়েছে। বরিশাল কৃষি তথ্য সার্ভিসের কর্মকর্তা নাহিদ বিন রফিক এ প্রসঙ্গে বলেন, সিত্রাং শীতের সবজির হয়তো সামান্য ক্ষতি করেছে। তবে এই যে শীতের আবহ এবং শিশির পড়ছে, তাতে সবজি আরও সতেজ এবং উৎপাদন ভালো হবে।
নগরের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এরই মধ্যে আগাম শীতের সবজি শিম, ফুলকপি, শালগম, টমেটো, মুলাশাক, লালশাক বিক্রি শুরু হয়েছে ধুমছে।
এদিকে শীত মোকাবিলায় আগেভাগেই নগরে গরম কাপড় কেনার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। নগরভবনসংলগ্ন কালেক্টরেট পুকুর ঘিরে শীতের কাপড়ের হাট বসছে প্রতিদিনই। সেখানে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ কেনাকাটা করছে। শনিবার সন্ধ্যার পর কথা হয় সোনিয়া আক্তার নামের এক কলেজছাত্রীর সঙ্গে। তিনি জানালেন, কিছুটা শীত পড়া শুরু করায় হালকা সোয়েটার কিনেছেন ৩০০ টাকায়।মোজাও কিনেছেন বেশ কিছু।
নগর ঘুরে দেখা গেছে, সদর রোড, প্রেসক্লাব গলি, বান্দ রোড, নবগ্রাম রোড, চৌমাথা, সিঅ্যান্ডবি রোডে ভাপা, চিতই ও পাটিসাপটা পিঠা কেনাবেচার ধুম পড়েছে।