নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
দুর্গাপূজার শেষ দিন আজ রোববার। যদিও শাস্ত্রমতে গতকাল শনিবারই নবমীর সঙ্গে দশমী পূজা করা হয়েছে। তবে বিসর্জন দেওয়া হবে আজ। এর মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে স্বামী মহাদেবের কাছে ফিরে যাবেন।
দশমীর পূজা গতকাল হয়ে গেলেও আজ প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ভক্তরা বিদায় জানাবেন দেবীকে। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে থাকবে বিষাদের ছায়া। উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর।
মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে ৯ অক্টোবর শুরু হয় দুর্গাপূজা। পাঁচ দিনের এই উৎসব শেষ হবে আজ। পঞ্জিকামতে, এবার নবমী ও দশমী তিথি একই দিনে পড়েছে। নবমী বিহিত পূজা শেষে গতকালই দশমী বিহিত পূজা ও দেবীর দর্পণ বিসর্জন করা হয়। শাস্ত্রমতে, নবমীতেই দেবী দুর্গা রুদ্ররূপ ধারণ করে বধ করেছিলেন মহিষাসুরকে।
নবমীর সকাল তাই অশুভ শক্তি থেকে মুক্তির সকাল। এ দিন সকাল ৬টা থেকে হয় নবমী বিহিত পূজা। ১০৮টি নীল পদ্ম, বেল পাতা, আম কাঠ, ঘি দিয়ে যজ্ঞের মাধ্যমে দেবী দুর্গার কাছে দেওয়া হয় আহুতি।
বিজয়া দশমীর অন্যতম আয়োজন ‘দেবীবরণ’। রীতি অনুযায়ী, সধবা নারীরা স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন সিঁদুর, পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গাকে সিঁদুর ছোঁয়ান। দেবীর পায়ে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর সেই সিঁদুর প্রথমে সিঁথিতে মাখান, পরে একে অন্যের সিঁথি ও মুখে মাখেন। মুখ রঙিন করে হাসিমুখে দেবীকে বিদায় জানান, যা সিঁদুর খেলা নামে পরিচিত। অনেক মণ্ডপে গতকালই দেবীবরণ সম্পন্ন হয়েছে।
গতকাল রাজধানীর একাধিক পূজামণ্ডপ ঘুরে দেখা যায়, মণ্ডপে মণ্ডপে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। খুব সকালে বৃষ্টির কারণে অনেক এলাকায় জলজট ছিল। এর মাঝেও ভক্ত, পূজারি ও দর্শনার্থীরা মণ্ডপগুলোয় ঘুরে ঘুরে প্রতিমা দর্শন করেছেন। দেবীর আশীর্বাদ কামনা করে চলে প্রার্থনা। ঢাকের বাদ্য, শঙ্খ ও কাঁসরের ধ্বনিতে মুখর ছিল মণ্ডপ। সন্ধ্যায় মণ্ডপগুলোয় বাড়তি আয়োজন ছিল আরতি প্রতিযোগিতা ও বর্ণিল আলোকসজ্জা।
আজ বাদ্যবাজনা, মন্ত্রোচ্চারণ ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিজয়ার শোভাযাত্রা। এরপর বুড়িগঙ্গা নদীর ওয়াইজঘাটের জলে একে একে বিসর্জন দেওয়া হবে প্রতিমা। আর সারা দেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে বিজয়ার শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।
আয়োজকেরা বলছেন, শনিবার দশমী পূজা হয়ে গেলেও রোববারই করা হবে প্রতিমা বিসর্জন। জানতে চাইলে বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, বিসর্জনের উদ্দেশ্যে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির থেকে কেন্দ্রীয় বিজয়া শোভাযাত্রা বের হবে বেলা ৩টায়। এরপর সন্ধ্যার মধ্যেই সদরঘাটে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হবে।