উদীয়মান পাঁচ দেশের অর্থনৈতিক জোট ব্রিকস। এর সদস্যরাষ্ট্রগুলোর অধিকাংশই চায় জোটের সম্প্রসারণ। বাংলাদেশসহ অন্তত ২৩টি দেশ পূর্ণ সদস্য হতে আনুষ্ঠানিকভাবে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বিষয়টি নিয়ে ২৪ আগস্ট শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনা করবেন জোটের নেতারা। বিশেষ আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সম্মেলনে যাওয়ার কথা রয়েছে। তবে এবারই বাংলাদেশ জোটটির পূর্ণ সদস্য হতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সন্দিহান কূটনীতিকেরা।
ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকা বর্তমানে ব্রিকসের সদস্য।
ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর ২২ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের কথা রয়েছে। ২৪ আগস্ট জোহানেসবার্গে এ সম্মেলনে তিনি বক্তৃতা করবেন।
সম্মেলনের আগের দিন ২৩ আগস্ট একই শহরে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের দায়িত্বরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের একটি সভায় তিনি নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন।
এশিয়া, আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার ৬৭ জন রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানকে ব্রিকস সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
তেলসমৃদ্ধ সৌদি আরবের এবারের সম্মেলনেই জোটের সদস্য হওয়া অনেকটাই নিশ্চিত বলে মনে করছেন কূটনীতিকেরা। আর সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, ইথিওপিয়া ও আর্জেন্টিনা জোর তৎপরতা চালাচ্ছে সদস্য হতে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ব্রিকসে সদস্য হতে আবেদন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে জোটটির বর্তমান সব সদস্য বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি সমর্থন দেবে বলে সরকার আশা করে।
চীন ইতিমধ্যে বাংলাদেশের প্রার্থিতার প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন দিয়েছে।
কূটনীতিকেরা বলছেন, ব্রিকসে পূর্ণ সদস্য কী নীতির ভিত্তিতে করা হবে, তা নিয়ে জোটের শরিকদের মধ্যে মতভেদ আছে। ইউক্রেন যুদ্ধসহ বর্তমান বৈশ্বিক রাজনৈতিক বাস্তবতায় চীন ও রাশিয়া চায়, উঠতি অর্থনীতির অনেকগুলো রাষ্ট্রকে সদস্য করে জোটের ব্যাপক সম্প্রসারণ। অন্যদিকে ভারত ও ব্রাজিল চায়, রয়েসয়ে জোটের সদস্যসংখ্যা বাড়াতে। সম্মেলনের স্বাগতিক রাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যপন্থা অনুসরণের সম্ভাবনা আছে।
বৈশ্বিক রাজনীতি এবং চীন ও ভারতের আঞ্চলিক বৈরিতার প্রভাবও ব্রিকসের সম্প্রসারণের ওপর পড়তে পারে বলে মনে করেন কূটনীতিকেরা।
ভারত অবশ্য জোটের সম্প্রসারণ নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে নারাজ। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেছেন, ব্রিকস সম্প্রসারণের নীতি-কাঠামো কী হবে, সে বিষয়ে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে সদস্যরাষ্ট্রগুলো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।
পূর্ণ সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিলে অন্ততপক্ষে পর্যবেক্ষক হিসেবে জোটে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশ এবারের শীর্ষ সম্মেলনেই নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে বলে জানান বাংলাদেশের একজন কূটনীতিক।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা, স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা এবং জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনলাইনে সম্মেলনে যোগ দেবেন।