Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

আজও গেজেটভুক্ত হননি মানিক

পীরগঞ্জ প্রতিনিধি

আজও গেজেটভুক্ত হননি মানিক

দেশমাতৃকার মুক্তির টানে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় হাতে তুলে নিয়েছিলেন অস্ত্র। ভারতে প্রশিক্ষণ শেষে পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে অংশ নিয়েছেন সম্মুখযুদ্ধে। কাজ করেছেন অ্যান্টি ট্যাংক মাইন অপসারণে। কিন্তু আজও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হতে পারেননি পীরগঞ্জের মোস্তাফিজার রহমান মণ্ডল মানিক। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও কাজ হচ্ছে না। ফলে এই বীরযোদ্ধা এখন অনেকটাই হতাশ হয়ে পড়েছেন।

উপজেলার খালাশপীর হাটের ঠাকুরদাস লক্ষ্মীপুর গ্রামের মানিক ১৯৭১ সালে নবম শ্রেণির ছাত্রাবস্থায় মার্চ মাসেই যুদ্ধে অংশ নেন। তারপর ওই বছরের ১০ অক্টোবর ভারতের পশ্চিম দিনাজপুরের পতিরাম ইয়ুথ ক্যাম্পে প্রশিক্ষণের জন্য যান। সেখানে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত অস্ত্র চালনার প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে আসেন। এরপর তিনি ৭ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যুদ্ধের শেষের দিকে অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে উপজেলার টিওরমারী গ্রামে অ্যান্টি ট্যাংক মাইন অপসারণ করেন।

মানিক জানান, ভারতীয় মিত্রবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতা করার জন্য দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত দিয়ে পীরগঞ্জে আসবে, এ খবর জেনে পাকিস্তানি সেনারা টিওরমারী গ্রামের রাস্তায় শ শ মাইন পুঁতে রাখে। বিষয়টি মানিকসহ তাঁর সহযোগীরা মিত্রবাহিনীকে জানালে তাঁরা মদনখালী ইউনিয়নের ত্রি-মোহনী ব্রিজের ওপর দিয়ে পীরগঞ্জে প্রবেশ করেন। এ ছাড়া টিওরমারী গ্রামে মানিক ও তাঁর সহযোদ্ধাদের সঙ্গে লড়াইয়ে দুই থেকে তিনজন পাকিস্তানি সেনা নিহত হন।

মানিকের লাল মুক্তি বার্তা নম্বর-১৭৫/১৮-এর সনদ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সনদপত্র রয়েছে। তিনি পীরগঞ্জের আংরার ব্রিজের যুদ্ধে অংশ নেন বলে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা রংপুর সদর উপজেলা কমান্ডার কামাল হোসেন, পীরগঞ্জের ফজলার রহমান ও অপিল উদ্দিন প্রত্যয়নপত্র দিয়েছেন। তারপরও যুদ্ধ শেষে তাঁর অনেক সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্ত হলেও তিনি তা পারেননি।

মানিক মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হতে ২০১৩ সালের ২৭ ডিসেম্বর আবেদন করলেও তাঁকে গেজেটভুক্ত করা হয়নি। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটি তা বাতিল করে। তিনি আপিল করলে সেটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

মানিক আক্ষেপ করে বলেন, ‘প্রশিক্ষণের আগে ও পরে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেও এখন সরকারের গেজেটভুক্ত হতে পারছি না। অথচ আমার সহযোদ্ধারা অনেকেই গেজেটভুক্ত হয়েছেন। আমি বছরের পর বছর ধরে ধরনা দিয়ে যাচ্ছি। সরকারি তালিকায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নাম ওঠাতে আর কত বছর ঘুরতে হবে জানি না। জীবনের শেষ বয়সেও স্বীকৃতি পাচ্ছি না।’

মানিক আরও বলেন, ‘যদি জানতাম মুক্তিযোদ্ধাদের স্বীকৃতি দেওয়া হবে, তাহলে তো আগেই আবেদন করতাম। কিন্তু আওয়ামী লীগ দেশের ক্ষমতায় আসার পরই মুক্তিযোদ্ধাদের মূল্যায়ন করা শুরু করে। তাই আমিও আবেদন করি। কিন্তু গেজেটভুক্ত হতে পারছি না।’

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তার মণ্ডল বলেন, ‘মানিক মণ্ডল কেন গেজেটভুক্ত হতে পারেননি তা আমার বোধগম্য নয়। উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সভায় বিষয়টি দেখা হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মণ্ডল বলেন, ‘মানিক মণ্ডল আমার আপন ছোট ভাই। সে মুক্তিযুদ্ধ করেছে, এটা সবাই জানে। কিন্তু কী কারণে তার নাম গেজেটে উঠছে না, বুঝতে পারছি না। আমি মানিক মণ্ডলের নাম গেজেটভুক্ত করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ