মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে ভেঙে পড়া বেইলি সেতুর কাজ শেষ হয়নি দুই বছরেও। ঢাকা থেকে দীঘিরপাড় যাতায়াতের প্রধান সড়কে অবস্থিত সেতুটি দ্রুত ঠিক করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, বেইলি সেতুটি ২ বছর আগে গাছের গুঁড়ি বোঝাই একটি ট্রাক অতিক্রম করার সময় ভেঙে পড়ে যায়। পরে পাশ দিয়ে একটি অস্থায়ী বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই সেতুটি দিয়ে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার হাজারো মানুষ প্রতিদিন চলাচল করছে। অস্থায়ী ওই সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত ১৪ মে সেতুটির গোড়ায় ব্যারিকেড না থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি প্রাইভেট কার খাদে পড়ে যায়। এতে জিসান ও ফাহিম নামে দুই বন্ধু নিহত হন এবং জাহিদ হাসান নামে একজন গুরুতর আহত হন। এর আগেও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ওই স্থানে পড়ে যায়। এতে দুজন গুরুতর আহত হন। দীর্ঘ ২ বছর ধরে এলাকাবাসী ওই স্থানে একটি পাকা সেতু নির্মাণ করে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।
স্থানীয়রা জানান, অস্থায়ী সেতুটির ওপর দিয়ে মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। যেকোনো সময় এই সেতুতে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তাঁরা। দ্রুত সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন এই পথে যাতায়াতকারী স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুরা বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. রুবেল বলেন, ‘দুই বছর আগে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর দুটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেতুটি নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। যদি দ্রুত সেতুটি নির্মাণ না করা হয়, তবে আবারও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
রুবেল আরও জানান, এই সেতুর গোড়ায় মাটি পরীক্ষার জন্য একটি বড় গর্ত খুঁড়ে রাখা হয়েছে। গর্তে বাজারের ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে পচা দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় বেড়েছে মশা-মাছির উপদ্রব।
স্থানীয় ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন এই সেতুর ওপর দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করেন। গত ১৪ মে এখানে একটি প্রাইভেট কার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। বাধ্য হয়ে জোড়াতালি দেওয়া বেইলি সেতু দিয়ে যানবাহন চালাতে হচ্ছে।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রকৌশলী ফাহিম রহমান খান বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের জন্য এখনো টেন্ডার হয়নি, এস্টিমেট দেওয়া হয়েছে। এস্টিমেট পাশ হলে টেন্ডার দেওয়া হবে। আশা করছি মাসখানেকের মধ্যে টেন্ডার দেওয়া হবে। ২০২০ সালে সেতুটি ভেঙে যাওয়ার পর পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য একটি বেইলি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। আগে ভেঙে পড়া সেতুটির মুখে বেরিক্যাড এবং সংকেত সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে।’