Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

৭১ ইটভাটায় যাচ্ছে নদীরপাড়, কৃষিজমির মাটি

আশরাফুল আলম আপন, বদরগঞ্জ (রংপুর)

৭১ ইটভাটায় যাচ্ছে নদীরপাড়, কৃষিজমির মাটি

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় ৭১টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ভাটায় ইট তৈরির মাটি নেওয়া হচ্ছে উপজেলার চারটি নদীর পাড় কেটে। কৃষিজমির উপরিভাগের (টপ সয়েল) মাটিও কেটে নেওয়া হচ্ছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিকলী নদীর চম্পতলী, বালাপাড়া, হাটখোলাপাড়া; যমুনেশ্বরী নদীর নাগের হাট, সোনাপাড়া, মাদাইখামার, নাওপাড়া; ঘৃনই নদের কাজিপাড়া, সোনাপাড়া এবং করতোয়া নদীর রামনাথপুরের বালাপাড়া, শেখপাড়া ও গোপীনাথপুরের বাবুপাড়া এলাকার পাড় কেটে ধ্বংস করা হচ্ছে। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। পুলিশ ও প্রশাসন তৎপর না থাকায় এসব সম্ভব হচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁদের।

সম্প্রতি দেখা গেছে, রামনাথপুরের শেখপাড়া ও গোপীনাথপুরের বাবুপাড়ায় করতোয়া নদীর পাড় কাটার নেতৃত্ব দিচ্ছেন এলাকার ফজলুল হক। ট্রাক্টরে করে পাড়ের মাটি সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায়। ট্রাক্টরচালক রুবেল বলেন, ফজলুল হকের নির্দেশে নদীর পাড়ের মাটি কাটছেন তিনি। তবে সেখানে ফজলুলকে পাওয়া যায়নি।

ফজলুলের ভাতিজা আরাফাত হুসাইন বলেন, নদী খননের মাটি জমিতে ফেলছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। সেখানে আবেদন করায় পাউবোর লোকজন এসে জমির মাটি তুলে নিতে বলেন। তাই তুলে নেওয়া হচ্ছে। সেখানে কোনো পাড় কাটা হচ্ছে না।

বালাপাড়ায় করতোয়া নদীর পাড় কাটছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য মাহবুব রহমান। আরাফাতের মতো একই কথা বলেন মাহবুবও।

ইটভাটার মালিক শামিমের নির্দেশে খননযন্ত্র দিয়ে পাইকারপাড়ায় ঘৃনই নদের পাড় কাটতে দেখা যায়। তবে তিনি পাড়ের মাটি কাটার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এদিকে কাঁচা টাকার লোভে কৃষিজমির মাটি ইটভাটার মালিকদের কাছে কৃষকেরা বিক্রি করছেন বলে জানা গেছে। আমরুলবাড়ি তুফানুপাড়া গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম ৫০ শতক তিন ফসলি জমির মাটি বিক্রি করেছেন ইটভাটায়। ওই জমি পাকা সড়কঘেঁষা। জমিটির ১০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে ইটভাটায় নেওয়ায় সড়কটি হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছেন গ্রামের মানুষ। তবে আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘নিজের জমির মাটি বিক্রি করছি। এতে দোষের কী?’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলায় কৃষিজমিতে নির্মাণ করা হয়েছে ৭১টি ইটভাটা। ভাটাগুলোতে কাঁচা ইট তৈরিতে প্রয়োজন হয় মাটির। আর এই মাটি সংগ্রহ করা হচ্ছে কৃষিজমির উপরিভাগ এবং নদীর পাড় কেটে। ইটভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকদের জমির ৩ থেকে ১০ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিচ্ছেন।

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) আইন, ২০১৯ অনুযায়ী, কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অকৃষিজমিতে ভাটা করা যাবে। তবে বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও এলজিইডি সড়ক থেকে ভাটার দূরত্ব হতে হবে কমপক্ষে এক কিলোমিটার। কৃষিজমি থেকে মাটি সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ আছে ওই আইনে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা মো. জোবাইদুর রহমান বলেন, উপরিভাগের মাটি কেটে নেওয়ায় জমি হারাচ্ছে উর্বরতা শক্তি। সেই জমি ২০ থেকে ৩০ বছরেও উর্বরতা শক্তি ফিরে পাবে না। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, কৃষকেরা জমির মাটি বিক্রি করলে তাঁদের করার কিছুই থাকে না। তবে মাটি বিক্রি না করতে কৃষককে নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছেন তাঁরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সাঈদ বলেন, কেউ আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে নদীর পাড় এবং কৃষিজমির মাটি কেটে নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ