সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে স্থানীয়দের নির্মিত বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ৪০ হেক্টর ফসলি জমি। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ বাঁধ ভেঙে হাওরে পানি প্রবেশ করে। এদিকে এ এলাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জরিপের বাইরে থাকায় পাউবো বাঁধ নির্মাণ করেনি। তবুও বাঁধ ধসে যাওয়ায় পাউবোকে দায়ী করছেন কৃষকেরা।
স্থানীয় লোকজন জানান, গত তিন দিন স্থানীয় কৃষকেরা দিন-রাতে মাটি ফেলার কাজ করেও বাঁধটি রক্ষা করতে পারেননি। তাঁরা পাউবোকে দোষারোপ করে বলেন, শাল্লা সেতুর পাশে হাওর রক্ষা বাঁধের একটি প্রকল্প দিলে অকাল বন্যায় তলিয়ে যেত না এই বোরো ধানের জমি। অন্যান্য বছর এই জায়গায় প্রকল্প দেওয়া হলেও এ বছর তা হয়নি। এতে অকাল বন্যায় কাঁচা ধান তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকেরা অসহায় হয়ে পড়েছেন। একমাত্র ফসল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তাঁরা।
ঘুঙ্গিয়ারগাঁও গ্রামের কৃষক রাজন রায় বলেন, ‘আট কেয়ার জমিতে বোরো আবাদ করেছি। সবকিছু তলিয়ে গেছে। বাঁচার কোনো পথ নেই। সন্তান নিয়ে কীভাবে চলব সে চিন্তায় দিশেহারা। পানি আসার আগে কয়েকবার প্রশাসনের কাছে যাই বাঁধ নির্মাণের ব্যবস্থা করার জন্য। তবে কাজ হয়নি। পরে নিজেরাই মাথায় করে মাটি ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি। শেষ মুহূর্তে আমরা হেরে গেলাম। রক্ষা করতে পারলাম না আমাদের ফসল।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও ও ডুমরা গ্রামের কৃষকেরা এই হাওরে বোরো আবাদ করেছেন। এই দুই গ্রামের কৃষকের ভাগ্য পানিতে ডুবে গেছে। প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হেক্টর জমি অকাল বন্যায় ভেসে গেছে। তবে প্রশাসন বলছে, জমির পরিমাণ হবে ৪০ হেক্টর।
কৃষি কার্যালয়ের তথ্যমতে, কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ‘কৈয়ারবন ও পুটিয়া হাওরে প্রায় ৪০ হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে এই বাঁধটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতার বাইরে। এরপরও আমরা চেষ্টা করেছি ফসলি জমি রক্ষা করার। কিন্তু উজানের পাহাড়ি ঢল ও নদীর পানি বাড়ায় ধান রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।’
শাল্লা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘এলাইনমেন্ট ও ডিজাইনের বাইরে থাকায় এ বাঁধে প্রকল্প দেওয়া হয়নি। কৃষকেরা নিজেরই মাটি বাঁধে মাটি ফেলেছেন। আমাদের পক্ষ থেকে এখানে টাকা দেওয়া হয়নি।’