রাজবাড়ী প্রতিনিধি
কয়েক বছর আগেও ড্রাগন ফল বিদেশি ফল হিসেবে পরিচিত ছিল। বর্তমানে দেশে চাষ বাড়ার কারণে এটি দেশি ফল হিসেবে পরিচিতি লাভ করছে। এই ফল চাষ করে অনেকেই সফলতা পেয়েছেন। রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়নের রূপপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল গফুর কাজী। ২০১৫ সালে প্রথমে প্রদর্শনী হিসেবে ড্রাগন ফলের চাষ করলেও এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে এই ফল চাষ করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আব্দুল গফুর ড্রাগন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফুল আর ফলে বাগান ছেয়ে গেছে। প্রায় ৫-৭ ফুট উচ্চতার পিলারের পাশে তিনি এই ড্রাগন গাছ রোপণ করেছেন। এই পিলারের ওপর লোহার রডের সঙ্গে সাইকেলের পুরোনো টায়ার দেওয়া হয়েছে। তাঁর বাগান দেখতে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ ড্রাগন চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন।
ড্রাগনচাষি আব্দুল গফুর কাজী বলেন, তিনি ৪০ বছর ধরে কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। কৃষি বিভাগের পরামর্শে ২০১৫ সালে প্রথমে প্রদর্শনী হিসেবে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন। পরে লাভ পাওয়ায় এখন তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। চারা রোপণের দুই বছর পর বাগানে ফল আসে। প্রথম বছর ২০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেন। দ্বিতীয় বছর এক লাখ এবং তৃতীয় বছর দেড় লাখ টাকার ফল বিক্রি করেন। চতুর্থ বছর বিক্রি করেন ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার ফল। চলতি বছর এ পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করেছেন তিনি। প্রতিবছর জুন থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ফল আসে। একবার চারা রোপণ করলে ফল পাওয়া যায় অন্তত ২০ বছর। এ ছাড়া বাজারে চাহিদা থাকায় বিক্রিতেও নেই ঝামেলা।
স্থানীয়রা কামরুল ইসলাম বলেন, গফুর কাজীর ড্রাগন চাষ দেখে এলাকায় অনেকেই এটির চাষ শুরু করেছেন। প্রতিদিনই পরামর্শ নিতে ও বাগান দেখতে আসেন অনেকেই। এই ফল খুবই সুস্বাদু। বাজারে দামও ভালো পাওয়া যায়।
জানা গেছে, দেশে যত বিদেশি ফল চাষ হয়, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় এই ড্রাগন ফল। ২০১১ সালে প্রথমে জেলার হর্টিকালচার সেন্টারে পরীক্ষামূলকভাবে এই ফলের চাষ শুরু হয়। এখন তার ব্যাপ্তি ছড়িয়েছে জেলার পাঁচটি উপজেলায়।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. বাহাউদ্দিন সেখ বলেন, রাজবাড়ী জেলার মাটি ড্রাগন চাষের উপযোগী। সদর উপজেলায় এ বছর ৩ একর জমিতে ড্রাগনের চাষ হয়েছে। ড্রাগন চাষিদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। নতুন ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি সম্ভাবনার ফসল। যে কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ড্রাগনের চাষ।