Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

এক ডাচ নারীর মমতা

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)

এক ডাচ নারীর মমতা

সাইকেল নিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে বিশ্বভ্রমণে বের হয়েছিলেন। বাংলাদেশে এসে থেমে যায় গতি। মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় থানার ফলসাটিয়া বাসস্ট্যান্ডে যাত্রাবিরতির সময় এক শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুর সঙ্গে দেখা হয় তাঁর। কথা বলেন শিশুটির সঙ্গে। সেই প্রতিবন্ধী শিশুর হামাগুড়ি দিয়ে পথ চলা তাঁর ভবিষ্যৎ ভাবনায় মোচড় দেয়। এই দৃশ্য মনে গেঁথে ফিরে যান নিজের দেশে।

নেদারল্যান্ডসের নাগরিক অ্যান্তোয়ানেতা তারমোশুইজেন আবার ফিরে আসেন বাংলাদেশে। এবার আর বিশ্বভ্রমণের নেশায় নয়, শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের মমতাময়ী হিসেবে। আসার আগে সংগ্রহ করেন ফান্ড। ডিজেবল রিহ্যাবিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশন (ডিআরআরএ) সংস্থার মাধ্যমে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ শুরু করেন।

৩০ বছর ধরে নিরলসভাবে প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোরদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুনর্বাসন ও অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন এই ডাচ নাগরিক। মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওর ও দৌলতপুর উপজেলায় চলছে কার্যক্রম। ঘিওর উপজেলায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে দুটি ডেকেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুনর্বাসনসেবা দিচ্ছেন। একীভূত সমাজ গঠনে ও প্রতিবন্ধীবান্ধব সমাজ তৈরি করার জন্য আপ্রাণ পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

করোনা বিপর্যয়ের সময় অসহায় শিশুদের অর্থ ও খাদ্যসহায়তা করেন অ্যান্তোয়ানেতা। প্রতিবন্ধী শিশুদের পরিবারকে আর্থিক বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠার জন্য রিকশা, ভ্যান, সেলাই মেশিন, উপকরণ ও সার-বীজ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন।

প্রথম অবস্থায় একটি ভাড়া বাড়িতে মাত্র ১০ জন প্রতিবন্ধী শিশু নিয়ে কাজ শুরু করেন এবং বর্তমানে নিজস্ব ক্যাম্পাসে প্রকল্পের আওতায় প্রায় ২ হাজার প্রতিবন্ধী শিশু-কিশোর সেবা পাচ্ছে। তাঁর মমতার চাদরে আগলে রাখেন শিশুদের। তাই প্রতিবন্ধী শিশুরা তাঁকে ‘খালাম্মা’ বলে ডাকে। তিনিও বেশ উপভোগ করেন এ ডাক।

তিনি ভিনদেশি নাগরিক। মানবতার টানে শত-সহস্র মাইল পেরিয়ে এসেছেন বাংলাদেশে। মমতাভরা তাঁর সোহাগ, শিক্ষা আর চিকিৎসায় প্রতিবন্ধী শিশুরা বোঝা থেকে হয়ে উঠছে সম্পদ। মানবিক কাজের স্বীকৃতি হিসেবে এই ডাচ নাগরিককে দেওয়া হয়েছে সম্মাননা স্মারক।

সম্প্রতি মানিকগঞ্জের ঘিওরে উপজেলা অডিটরিয়ামে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান হাবিবসহ অন্যরা। ইউএনও হামিদুর রহমান, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোহছেন উদ্দিন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ফুল দিয়ে বরণ করে তাঁর কাজের প্রতি স্বীকৃতি সম্মান প্রদর্শন করেন অতিথিরা।

অ্যান্তোয়ানেতা তারমোশুইজেন বলেন, ‘এ অঞ্চলের প্রতিবন্ধী শিশুরা এখন আর পরিবার ও সমাজের বোঝা নয়, তারা সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে জীবন-যাপন করছে। আজ আমি ঘিওর উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে প্রশংসা পেয়েছি। আমার কাছে খুব বিশেষ একটি মুহূর্ত।সম্মানটি ডিআরআরএ কর্মীদের কাছে যাওয়া উচিত, যারা আমাদের সন্তানদের একটি ভালো ভবিষ্যৎ অর্জনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আমাদের যে সহযোগিতা করে আসছে, তার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ।’

ঘিওর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এই মহীয়সী মানুষকে আমাদের উপজেলার পক্ষ থেকে সম্মানিত করতে পেরে আমরা আনন্দিত এবং গর্বিত। তাঁর মতো মানুষেরাই সমাজের আলোকবর্তিকা।’

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ