নেদারল্যান্ডসে প্রশিক্ষণে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া দুই পুলিশ সদস্যের মধ্যে একজন হলেন চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার বৈদ্দেরখীল গ্রামের শাহ আলম। সন্তানের এমন উধাও হওয়া নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন তাঁর দরিদ্র মা-বাবা। তাঁদের প্রশ্ন, এত নিরাপত্তার মধ্যেও শাহ আলম কীভাবে নিখোঁজ হলেন?
গতকাল শনিবার বিকেলে শাহ আলমের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ‘বাবা শাহজাহান রিকশা চালানো শেষে গরুর পরিচর্যা করছেন। মা শিরিনা বেগম গরুর জন্য ভাতের মাড় আনতে বিভিন্ন বাড়িতে যাচ্ছেন। বাড়িতে থাকার জন্য রয়েছে নড়বড়ে দুটি ঘর।
শাহ আলমের বাবা শাহজাহান বলেন, ‘আমার ছেলে বর্তমানে কোথায় আছে, তা আমি জানি না। নেদারল্যান্ডসে যাওয়ার আগে বলে গিয়েছিল, প্রশিক্ষণের জন্য সেখানে যাচ্ছে। তারপর থেকে আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। তিন-চার দিন আগে বাড়িতে পুলিশ সদস্যরা এসে ছেলের খোঁজ করার সময় আমাদের জানান, শাহ আলম সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। এরপর থেকে প্রশাসন আমাদের ওপর কড়া নজরদারি রেখেছে। বারবার থানায় ডেকে নেওয়া হচ্ছে, রেখে দেওয়া হয়েছে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি।
শাহ আলমের মা শিরিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘যাওয়ার আগে সে আমাদের বলে গেছে, উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে যাচ্ছে। তারপর থেকে আমার ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। পুলিশ বলছে, আমার ছেলে নাকি সেখান থেকে পালিয়ে গেছে। সে কোথায় আছে, কীভাবে আছে আমরা কিছুই জানি না।’
চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার মেয়র জিএম মীর হোসেন মীরু বলেন, ‘নেদারল্যান্ডসের প্রশিক্ষণ থেকে পালিয়ে শাহ আলম বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছে। আমি আশা করি, তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পারবেন এবং দেশে ফিরে আত্মসমর্পণ করে পুনরায় পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেবেন।’
চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শুভ রঞ্জন চাকমা বলেন, ‘মৌখিকভাবে শাহ আলমের পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরেছি। এর বাইরে এখন আর কিছুই বলতে পারব না।’
৯ মে শাহ আলমসহ চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি)-৮ এর সদস্য হিসেবে ডগ স্কোয়াডের প্রশিক্ষণ নিতে নেদারল্যান্ডস গিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছয়জন গত ২৪ মে দেশে ফিরে এলেও শাহ আলম ও কক্সবাজারের রাসেল চন্দ্র দে নামে দুজন ফেরত আসেননি। দেশে ফেরার আগের দিন তাঁরা কৌশলে হোটেল থেকে পালিয়ে যান।