জনবলসংকটে ভুগছে বরগুনার বেতাগী উপজেলা কৃষি বিভাগ। এখানে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মোট ৩৮টি পদের মধ্যে ২৪টিই দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে। এতে কৃষিনির্ভর উপকূলীয় এ এলাকার প্রায় ২৫ হাজার কৃষক কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেবামূলক এ প্রতিষ্ঠানের সুফল ভোগ করতে পারছেন না তাঁরা। দ্রুত জনবলসংকট নিরসন করে প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।
বেতাগী উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাতটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত এ উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর। তালিকাভুক্ত কৃষকের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। এ এলাকায় ধানের পাশাপাশি প্রচুর সবজির চাষ হয়। বেতাগীতে উৎপাদিত ধান, মুগ, খেসারি, তরমুজ, করলা, টমেটো, শসা, শিম, কাঁচা মরিচসহ নানা রকম কৃষিপণ্য দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। এসব দেখভালে কর্মকর্তা ও কর্মচারী মিলে উপজেলা কৃষি বিভাগে অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩৮টি। এতে কর্মরত মাত্র ১৪ জন।
উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তার এক, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তার এক, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার সতেরো, উচ্চমান সহকারী কাম হিসাবরক্ষকের এক, স্প্রে মেকানিকের এক, পিপিএমের দুই ও নিরাপত্তা প্রহরীর একটি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য রয়েছে।
জনবলসংকটের কারণে স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী কৃষকদের প্রকৃত সেবা বা পরামর্শ দিতে পারছেন না। তা ছাড়া প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় কৃষি বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্প সঠিকভাবে প্রয়োগ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফলে ফসল উৎপাদনে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের খোন্তাকাটা এলাকার কৃষক মো. শাহজাহান হাওলাদার বলেন, এ এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার পদটি শূন্য।
সঠিক সময়ে অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না। যে কারণে সমস্যায় পড়লে পরামর্শ পেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
উপজেলার বিবিচিনি ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, বিবিচিনি ইউনিয়নে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার তিনটি পদের মধ্যে দুটিই শূন্য রয়েছে। ফলে তিনজনের কাজ একা করতে হয়। এতে সুষ্ঠুভাবে কাজ করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় শুক্র-শনিবার ছুটির দিনেও সকাল-সন্ধ্যা কৃষকের সঙ্গে কাজ করতে হয়। এভাবে কৃষকদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হয় না।
জনবলসংকটের কারণে মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে জানিয়ে বেতাগী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইছা বলেন, জনবলসংকটের কারণে সবাইকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। অনেকগুলো পদ শূন্য থাকায় মাঠ কার্যক্রমসহ অন্যান্য কাজকর্ম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ বিষয়ে বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালকের মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।