ময়মনসিংহের ত্রিশালে কচুর লতি চাষে আগ্রহ বাড়ছে। কচুর লতি বিক্রি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের অনেক প্রান্তিক চাষি। এ ছাড়া লতি চাষে আগ্রহ বাড়াতে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস। দেশের বিভিন্ন স্থানে এখানকার লতির ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিক্রি হয় প্রচুর। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকার কারওয়ান বাজার, টঙ্গী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে এই লতি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় কাঠ কচু ও কচুর লতি চাষ হয়েছে ৩০০ হেক্টর জমিতে। তবে কচুর লতি চাষই বেশি হচ্ছে। শুধু রামপুর ইউনিয়নে মোট ২০০ হেক্টরের মতো জমিতে কচুর লতি চাষ হচ্ছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় লতিরাজ কচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের। এখানকার লতি বিদেশে রপ্তানি করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের বীররামপুর, গফাকুঁড়ি ও ঠাকুরবাড়ী এলাকায় ব্যাপক চাষ হয়েছে লতির। এর মধ্যে লতির গ্রাম হিসেবে উপজেলায় পরিচিতি পেয়েছে গফাকুড়ি ও ঠাকুরবাড়ী এলাকা। এই দুই গ্রামের কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে লতি চাষ করে সংসার চালান।
স্থানীয় কৃষক আজগর আলী মণ্ডল ও জামাল উদ্দিন বলেন, তাঁরা বেশ কয়েক বছর ধরে লতি চাষ করছেন। তাঁরা বারোমাসি লতি চাষ করেন; কারণ, ধানের থেকে তা লাভজনক।
এ ছাড়া আব্দুর রহমান, ইব্রাহিম, নবী নেওয়াজসহ অন্যরা নিজের জমির পাশাপাশি পাইকারি লতির ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন। স্থানীয় গফাকুঁড়ি, ঠাকুরবাড়ি মোড়ে তাঁরা শ্রমিক দিয়ে লতি পরিষ্কার করে অন্য জেলায় বিক্রির উদ্দেশে পাঠান।
স্থানীয় বাজারে কথা হয় শরিফুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা কচুর লতি কিনতে এসে বিক্রেতার কাছে জিজ্ঞাসা করি, এগুলো রামপুরের কচুর লতি কি না। স্বাদের দিকে এই লতির তুলনা হয় না। হয়তো ওখানের মাটিই ভালো মানের লতি চাষের উপযোগী।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ত্রিশালে উৎপাদিত কচুর লতি সারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়। ভালো মানের হওয়ায় সারা দেশেই এখানকার লতির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন ভালো হওয়ায় লতিরাজ কচু চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে স্থানীয় কৃষকদের। চাহিদার কথা চিন্তা করে বিদেশে রপ্তানি করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।