Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছর: দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ৮ বছর: দুঃসহ স্মৃতি ভুলতে পারেনি এলাকাবাসী

২০১৬ সালের ৭ জুলাই। ঈদুল ফিতরের দিন। সময় সকাল পৌনে ৯টা। কিশোরগঞ্জ শহরের প্রতিটি রাস্তা ও অলিগলিতে জনস্রোত। ঈদের নামাজ পড়তে সবাই শোলাকিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যেই হঠাৎ বিস্ফোরণের শব্দ। বিস্ফোরণ হয় মাঠ থেকে ২০০ গজ দূরে আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের পাশে, মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদসংলগ্ন রাস্তায়। পুলিশের চেকপোস্টে বাধা পেয়ে বোমা হামলা করে জঙ্গিরা। রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের ভয়াবহ হামলার ছয় দিন পর শোলাকিয়ায় এই রক্তাক্ত হামলার ঘটনা ঘটেছিল। সেই দুঃসহ স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি এলাকাবাসী। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সবুজবাগ গলির মাথায় মুফতি মোহাম্মদ আলী মসজিদের সামনে টহলরত ছিলেন ১০-১২ জন পুলিশ সদস্য। সেখান দিয়ে দুই জঙ্গি ঈদের জামাতে ঢোকার সময় তাঁদের ব্যাগ তল্লাশি করতে যায় পুলিশ। এ সময়েই হাতবোমা ছুড়ে মারা হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে। বোমার বিস্ফোরণে কয়েক পুলিশ সদস্য মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আহত অন্য পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে পিছু হটেন। চেকপোস্ট আক্রান্ত হওয়ার খবরে অন্য পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জঙ্গিদের ধরতে অভিযানে নামেন। এ সময় জঙ্গিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ শুরু করে। পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। চেকপোস্টটি দিয়ে ঈদগাহমুখী মুসল্লিরা তখন আত্মরক্ষার্থে দিগ্‌বিদিক ছুটতে থাকেন। 

পুরো বিষয়টি পাঁচতলার বাসা থেকে প্রত্যক্ষ করেন সবুজবাগ এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান রেনু। তিনি জানান, পুলিশের সঙ্গে জঙ্গিদের গোলাগুলির সময় কান ঝালাপালা অবস্থা। জঙ্গিরা ঢুকে পড়ে রেনুর বাসার সামনে সবুজবাগ গলিতে। ভয়ে বাসার সবাই দরজা-জানালা বন্ধ করে মেঝেতে শুয়ে পড়েন। নিচের গেট লাগিয়ে দেওয়া হয়। রেনু বাসার চারতলায় গিয়ে জানালার পাশে অবস্থান নেন। তাঁর বাসার পাশের বাসার বাইরে ঘুপচিতে দুই জঙ্গি অবস্থান নিয়েছিল। 

রেনু বলেন, পুলিশ গুলি ছুড়তে ছুড়তে যখন ঘুপচির দিকে এগিয়ে যায়, তখন এক হামলাকারী পুলিশকে লক্ষ্য করে হাতবোমা নিক্ষেপ করে। ঘুপচির ওপাশে দেয়াল থাকায় দুই হামলাকারী আটকা পড়ে যায়। এক হামলাকারী এ সময় হাতে থাকা চাপাতি ঘোরাতে ঘোরাতে পুলিশকে আক্রমণ করতে আসে। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা গুলি করে চাপাতি হাতে থাকা জঙ্গিকে মাটিতে ফেলে দেন। 

এ ঘটনার সময় একটি গুলি সবুজবাগের বাসিন্দা গৌরাঙ্গ নাথ ভৌমিকের ঘরের টিনের জানালা ভেদ করে তাঁর স্ত্রী ঝর্ণা রানী ভৌমিকের মাথায় লাগে। সঙ্গে সঙ্গে মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান তিনি। জঙ্গিদের হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম তপুর মৃত্যু হয়। কনস্টেবল আনসারুল হককে ময়মনসিংহ সিএমএইচে নেওয়ার পর ওই দিন দুপুরে তিনি মারা যান। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ঘটনাস্থলে নিহত হন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া জঙ্গি আবির রহমান (২৩)। ঘটনাস্থল থেকে অন্য জঙ্গি দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের শফিউল ইসলামকে (২২) গুলিবিদ্ধ অবস্থায় র‍্যাব আটক করে। পরবর্তী সময়ে নান্দাইলের ডাংরি এলাকায় র‍্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে তাঁর মৃত্যু হয়। 

ঘটনাস্থল সবুজবাগ গলির নাম এখন ‘ঝর্ণা রানী ভৌমিক সড়ক’। গলির ভেতরে বিভিন্ন বাসার দেয়ালে এখনো গুলির চিহ্ন। এগুলো মুছে যায়নি। আট বছরেও এলাকাবাসী ভুলতে পারেননি সেই দুঃসহ স্মৃতি। সেই ভৌমিক নিবাসে আজও শোকের আবহ। যে জানালাটা ভেদ করে গুলি ভেতরে গিয়ে ঝর্ণা রানী মারা যান, সেই জানালাটার পাশে টানানো হয় ঝর্ণার ছবি। তাঁর স্বামী গৌরাঙ্গ গত ১৮ জুন মারা গেছেন। তাঁদের সন্তান শুভ দেব পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এখনো সেদিনের কথা মনে হলে তাঁরা আঁতকে ওঠেন। বিশেষ করে তখন যারা ছোট ছিল, তাদের মন থেকে এ ঘটনার স্মৃতি দূর হচ্ছে না কিছুতেই। 

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ