চলতি মৌসুমে ধানের দাম বেশি হওয়ায় দিনাজপুরের হিলিতে মিলারদের খাদ্যগুদামে চাল দেওয়ার আগ্রহ নেই। সরবরাহে চুক্তিবদ্ধ হলেও সংগ্রহ অভিযান শুরুর দেড় মাসের বেশি সময়ে খাদ্যগুদামে এসেছে মাত্র ৭০ টন চাল। তবে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ।
হিলির শিরিন হাসকিং মিলের স্বত্বাধিকারী সামসুল ইসলাম জানান, ‘বর্তমানে বাজারে মোটা ধানের দাম রয়েছে সাড়ে ৯শ থেকে এক হাজার টাকা। তাতে করে আড়তদারের কাছ থেকে আমাদের ধান কিনতে হয় এক হাজার ২০ টাকা করে। এর সঙ্গে ১৫ টাকা রয়েছে পরিবহন খরচ। এরপর সিদ্ধ প্রতিমণ ধান শুকাতে ২৫ টাকা ও ১০ টাকা ভাঙানো বাবদসহ আনুষঙ্গিক প্রতিমণ ধানে খরচ পড়ে ৭০ টাকা।’
তিনি বলেন, ‘সরকার যে ধান ক্রয় করে তাতে এক মণ ধানে ২৮ কেজি চাল নামবে। কিন্তু আমরা বর্তমানে বাজার থেকে যে হিসাবে ধান ক্রয় করি, তাতে করে আমাদের এক মণ ধানে সর্বোচ্চ ২৭ কেজি চাল নামবে। সব খরচ মিলিয়ে আমাদের এক কেজি চালের উৎপাদন খরচ পড়ে ৪০ টাকা ৯২ পয়সা বা ৪১ টাকা। এর সঙ্গে ওজন, শ্রমিক পরিবহন মিলিয়ে ৪২ টাকার মতো পড়তা পড়ে। কিন্তু সরকার এবারে চালের মূল্য নির্ধারণ করেছে ৪০ টাকা কেজি। তাতে করে সেই মূল্যে চাল দিতে হলে লোকসান গুনতে হবে মিলারদের।’
তিনি আরও বলেন, যেহেতু চুক্তিবদ্ধ হয়েছি, তাই লোকসান হলেও লাইসেন্স বাঁচাতে খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহ করব এবং আমার মতো অনেকেই চাল সরবরাহ করবে। তবে সবাই ধানের দাম একটু কমার অপেক্ষায় রয়েছে, দাম কমলেই ধান কিনে চাল করে গুদামে সরবরাহ করা হবে।’
হিলি এলএসডি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা জোসেফ হাসদা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে মিলারদের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজিদরে ২০১ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৭ নভেম্বর হিলি খাদ্যগুদামে আনুষ্ঠানিকভাবে চাল সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত সাতজন মিলার ৭০ টনের মতো চাল সরবরাহ করেছেন। অন্যরা এখনো চাল সরবরাহ করেননি। আশা করছি, চাল সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা সেটি পূরণ করা সম্ভব হবে।
উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চলতি মৌসুমে মিলারদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহের যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে, তার বিপরীতে চাল সরবরাহের জন্য উপজেলার ২৩ জন মিলারের মধ্যে ২২ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। তবে, সেভাবে মিলাররা এখনো চাল দেওয়া শুরু করেননি। আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সংগ্রহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যেহেতু আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংগ্রহের সময়সীমা নির্ধারণ রয়েছে, তাই আশা করছি ওই সময়ের মধ্যে মিলাররা গুদামে চাল সরবরাহ করবেন।’