এইচ এম শাহনেওয়াজ, পুঠিয়া
তিন বছর ধরে বিক্রি না হওয়ায় চরম অর্থকষ্টে পড়েন ‘শান্তবাবু’র মালিক আলিম উদ্দীন। তাই ঋণের বোঝা বেড়ে যাওয়ায় একরকম বাধ্য হয়েই ৩৩ মণ ওজনের ষাঁড়টি অর্ধেক দামে বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে। আর এটি মাত্র ৬ লাখ ৬ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছেন গ্রামবাসীরা। সামনে
কোনো বিশেষ দিনে জবাই করে ষাঁড়ের গোশত ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেবেন তাঁরা।
শান্তবাবুর মালিক আলিম উদ্দীন বলেন, ‘শান্তবাবুর বয়স এখন সাড়ে ৪ বছর। ওজন প্রায় ৩৩ মণ। গত দুবছর ঈদুল আজহায় ষাঁড়টি বিক্রির জন্য অনেক চেষ্টা করেছিলেন। বিগত বছরে করোনা মহামারির প্রভাবে ও দরদামে না হওয়ায় বেচা সম্ভব হয়নি। আর এবার ১২ লাখ টাকা দরদাম হলেও পরে ওই ক্রেতা আর আসেননি। ফলে এলাকার লোকজন ষাঁড়টি কসাইয়ের কাছে বিক্রি করে দিতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি কসাইয়ের কাছে বেচতে চাননি। শান্তবাবুকে পুষতে অনেক
ব্যয় হয়। গত দুবছরে প্রায় ৩ লাখ টাকা ঋণ হয়েছে।
আলিম উদ্দীন আরও বলেন, ‘আর কুলাতে পারছি না। সম্প্রতি গ্রামের লোকজন ষাঁড়টি কিনতে চান। ঋণ শোধ করতে প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি করে দিয়েছি শান্তবাবুকে।’
আলিম উদ্দীনের স্ত্রী সালমা বেগম দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, শান্তবাবুকে পুষতে ইতিমধ্যে দেড় বিঘা জমি বন্ধক দিয়েছেন তাঁরা। গরুর খাবারের দোকানেও তিন লাখের বেশি টাকা বকেয়া পড়েছে।
প্রতিবেশী আশরাফুল ইসলাম বলেন, শান্তবাবু এলাকার মধ্যে সবচেয়ে বড় ষাঁড়। দুবছর ধরে কোরবানির ঈদ এলেই চাচার এই গরু দেখতে বিভিন্ন এলাকার লোকজন এসেছেন। এদের মধ্যে দুয়েকজন দামদরও করেছেন। তবে তারা দাম অনেক কম বলেন। তাই তিনি শান্তবাবুকে বিক্রি করতে পারেননি। বর্তমানে তিনি শান্তবাবুকে নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন। তাই আমরা কয়েকজন মিলে ৬ লাখ ৬ হাজার টাকায় কিনে নিয়েছি। সামনের মাসের শুরুতে জবাই করা হবে এটি। আর সব শেয়ারধারীর মধ্যে গোশত সমভাবে বণ্টন করে দেওয়া হবে।