১৯৭১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তখন দেশে প্রবেশ করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্তের তেলিখালি পৌঁছে যুদ্ধ করে ৩ ডিসেম্বর স্থানটি শত্রুমুক্ত করেন। পরে সাত দিন পথে পথে যুদ্ধ করে হালুয়াঘাট, ফুলপুর, তারাকান্দা ও শম্ভুগঞ্জ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দখল মুক্ত করে যৌথ বাহিনী।
পরে পুরোনো ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে পৌঁছালে মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে দাঁড়াতে না পেরে হানাদার বাহিনী তল্পিতল্পাসহ ময়মনসিংহ থেকে রাজধানী ঢাকার দিকে পালিয়ে যায়। মুক্তিবাহিনী আনন্দ আর উল্লাস করে ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর ব্রহ্মপুত্র নদ পার হয়ে সার্কিট হাউস মাঠে জাতীয় পতাকা প্রথম উত্তোলন করে।
ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার সাম সিং বাবাজী ও তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা যুব শিবিরের প্রধান সাবেক ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমানের নেতৃত্বে পতাকা ওড়ান। পরে শহরে সর্বস্তরের মানুষ রাস্তায় নেমে এসে আনন্দ-উল্লাস ও মিছিল করে। দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্যোগে নগরীর ছোট বাজার মুক্তমঞ্চে সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান মালার আয়োজন করা হয়েছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষক বিমল পাল বলেন, নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও মূল্যবোধ লালনে উৎসাহিত করতে অঞ্চলভিত্তিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস স্কুল কলেজের পাঠ্য পুস্তকে অন্তভুক্ত করতে হবে।
ময়মনসিংহ মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ইউনিট কমান্ডার সেলিম সরকার বলেন, দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে মিত্র বাহিনীর সহযোগিতায় দেশ স্বাধীন করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হলেই আমরা মনে করি স্বাধীনতা সার্থক হয়েছে।