গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার একাংশে রয়েছে পাঁচটি বিল। এগুলো হলো পুবের বিল, হোগলার বিল, তারাইল বিল, জোয়ারিয়া বিল ও মধুখালী বিল। বিলগুলোতে রয়েছে প্রায় ২ হাজার ৬০০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ে চাষাবাদের জন্য ১ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমি অনাবাদি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না’—প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে এ বছর প্রথম পর্যায়ে ৫টি বিলের ৫০০ হেক্টর অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আসছে। এ কারণে কৃষককে নানান জাতের ফসল উৎপাদনে উদ্বুদ্ধ করছে টুঙ্গিপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
এর মধ্যে উপজেলার পাটগাতী ও ডুমুরিয়া ইউনিয়নে রয়েছে পুবের বিল, বর্ণি ইউনিয়নে হোগলার বিল এবং গোপালপুর ইউনিয়নের মধ্যে কিছু অংশজুড়ে রয়েছে তারাইল বিল, জোয়ারিয়া বিল ও মধুখালী বিল।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ৩০ বছর ধরে বিলের এসব জমিতে কোনো ফসল উৎপাদিত হতো না। বছরের অধিকাংশ সময় পানি জমে থাকত। কোনো কোনো জায়গায় আগাছায় পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে প্রাথমিকভাবে ১ হাজার ৭৩০ হেক্টর অনাবাদি জমি চিহ্নিত করেছে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ।
পুবের বিলে গিয়ে দেখা গেছে, বিলের জমি চাষ উপযোগী করে রোপণ করা হচ্ছে ধান। যেসব জমি ধান চাষের জন্য উপযোগী নয়, সেসব জমিতে চাষ করা হচ্ছে কন্দাল ফসল, বেড়িবাঁধের ঢালে মাচা এবং সীমানার খালে ভাসমান বেড তৈরি করে নানান জাতের সবজি ও তরকারি। এর আগে প্রস্তুতির জন্য পাওয়ার টিলার দিয়ে সাত-আটবার জমি চাষ দেওয়া হয়। সুপার পাওয়ার দিয়ে জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার এবং জমির উর্বরতা বাড়ানোর জন্য সার দেওয়া হয় বলে টুঙ্গিপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।
অপর দিকে জোয়ারের পানি যাতে জমিতে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য স্লুইচ গেটগুলোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ২০ জানুয়ারি থেকে টুঙ্গিপাড়া কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ অনাবাদি জমি আবাদের আওতায় আনার জন্য কার্যক্রম শুরু করে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী অনাবাদি জমি দেখার জন্য টুঙ্গিপাড়ার পুবের বিল ভ্রমণ করেন। অনেক অনাবাদি জমি দেখার পর সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দেন জমিগুলো আবাদের আওতায় আনার জন্য। তাঁর নির্দেশে ইতিমধ্যে পুবের বিল সীমানার খালে ১০০ বিঘা জমি আবাদের আওতায় আনতে সব কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। এখন চারা রোপণ করা হচ্ছে।