হোম > ছাপা সংস্করণ

পাখির বাসা যাচ্ছে ইউরোপে

জাহিদ হাসান, যশোর

যশোর সদরের সীতারামপুর গ্রামের ঋষিপল্লির বাসিন্দা সীতা রানি। বিয়ের বছরখানেক পর থেকেই শুরু করেন পাখির বাসা বানানোর কাজ। তাঁর তৈরি পাখির বাসা রপ্তানি করা হচ্ছে ইউরোপের ছয় দেশে। প্রায় ৩৬ বছর ধরে এ কাজ করছেন তিনি। তাঁর স্বামীও চাকরি ছেড়ে মন দেন এ কাজে। দুজন মিলে কাজ করে তিন সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়েছেন। গড়ে তুলেছেন পাকা বাড়ি।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে ব্যবসায়ীদের পাঠানো নমুনা দেখে তৈরি করা হচ্ছে নানা ডিজাইনের পাখির বাসা। ঢাকার ব্যবসায়ীরা বিমান ও নৌপথে এসব পাখির বাসা রপ্তানি করছেন ইউরোপের বিভিন্ন দেশে। ইউরোপের নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের বিভিন্ন শহরে শৌখিন পাখি উৎপাদন খামারে যাচ্ছে যশোরে উৎপাদিত প্রায় ২৫-৩০ ধরনের পাখির বাসা।

সীতা রানি বলেন, একটি পাখির বাসা তৈরি করলে মজুরি পান ৫ থেকে ৭ টাকা। দিনে ৮০ থেকে ১০০টি বাসা বানাতে পারেন। প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয় তাঁদের। ঝুড়ি বোনার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে পাখির বাসা বানাচ্ছেন তিনি।

সীতা রানির মতো পাখির বাসা তৈরি করে ভাগ্য ফিরেছে পার্শ্ববর্তী দাসপাড়া, ধলিগাতী, এড়ান্দা, আবাদ কচুয়ার কয়েক শ পরিবারের। তবে বর্তমান বাজার অনুযায়ী  তাঁরা ন্যায্য মজুরি পাচ্ছেন না বলে মনে করেন। সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে দিতে কাজ করছেন তাঁরা। বর্তমানে ইউরোপের ছয় দেশে রপ্তানি হচ্ছে পাখির বাসা। এতে বছরে কোটি টাকার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আসছে দেশে।

পঞ্চাশোর্ধ্ব সীতা রানি বলেন, ‘৩৬ বছর ধরে পাখির বাসা তৈরির কাজ করছি। ২৫ ধরনের বাসা বানাতে পারি। বাঁশ, পাট, কাতা (নারকেলের ছোবড়া), খড়, বিচালি, বাঁশপাতা, কাঠ জাতীয় নানা উপাদান দিয়ে এই বাসা তৈরি করা হয়। যখন যে ধরনের অর্ডার থাকে, তখন সেই ধরনের বাসা তৈরি করা হয়। বড় ধরনের বাসার জন্য ৭ টাকা, মাঝারি ৫ ও ছোট বাসার ক্ষেত্রে ৩ টাকা করে মজুরি দেওয়া হয়।’

সীতা রানি আরও বলেন, স্বামীসহ তিনজন মিলে কাজ করে মাসে ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ বাসা তৈরি করা যায়। বাঁশসহ উপকরণের দাম এখন বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম। তাই মজুরি বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।

সম্প্রতি সীতারামপুর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, ঘরে ঘরে পাখির বাসা তৈরির কাজ চলছে। ঘরের বারান্দা ও আঙিনায় শীতের মিষ্টি রোদে বসে নারী-পুরুষ মিলে পাখির বাসা বুননের কাজ করছেন। পুরুষেরা বাঁশের চাটাই দিয়ে বুননের মূল উপকরণ তৈরি করছেন। নারীরা বাসা তৈরির জো (কাজের শুরু) তুলছেন। আরেকজন বাসা তৈরির কাজ শেষ করছেন।

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি যশোরের সভাপতি সাকির আলী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে এসব পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে খাতসংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংক ঝুমঝুমপুর শাখার সদ্য বিদায়ী ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এসব রপ্তানিমুখী শিল্পে ঋণ দিতে আগ্রহী। এই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণের প্রয়োজনে আমাদের পাশে পাবে।’

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ

সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ প্রাণহানি

সেকশন