নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
একে জ্যৈষ্ঠ, তার সঙ্গে তাপপ্রবাহ যোগ হয়ে গরমে কাহিল মানুষ। বৃষ্টি না হওয়ায় গরমের অনুভূতি বেড়েছে আরও। ঘামে ভিজছে শরীর। এর ওপর লোডশেডিং মানুষের কষ্ট বাড়িয়েছে। রাজধানীতে ঘণ্টা ধরে লোডশেডিং হলেও গ্রামাঞ্চলে পরিস্থিতি আরও খারাপ। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও লোডশেডিং হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরও কোনো স্বস্তির খবর দিতে পারেনি। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, রাজধানীসহ সারা দেশে বইছে মৃদু, মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ। বাতাসে জলীয়বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় প্রকৃত তাপমাত্রার চেয়ে গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। সেই সঙ্গে শরীরে ঘাম হচ্ছে। এমন তাপমাত্রা আরও চার-পাঁচ দিন থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা কমতে পারে
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, গরমের কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ায় লোডশেডিংও বেড়েছে।
উত্তরা এলাকার গৃহিণী মেহের স্বপ্না বলেন, ‘তিন-চার দিন ধরে যে গরম পড়েছে, তাতে আর টেকা যাচ্ছে না। তার ওপর বারবার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। একবার গেলে ৪০ মিনিটের আগে আসে না।’
খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া এলাকায় ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন রিকশাচালক মোক্তার সর্দার। গরম থেকে কিছুক্ষণের জন্য বাঁচার চেষ্টা করছিলেন। তিনি বলেন, ‘রিকশায় পেডল মারলেই শরীরটা ঘামে ভিইজ্যা যায়। সারা দিন কষ্টের পর রাতে ঘরে গিয়া ঘুমাইতেও পারি না লোডশেডিংয়ের কারণে। গত দুই-তিন দিন এমন হইতাছে।’
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, দেশের অধিকাংশ জায়গায় মৃদু থেকে মাঝারি ও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৪০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক আজকের পত্রিকাকে বলেন, আরও চার-পাঁচ দিন এমন তাপমাত্রা থাকতে পারে। তারপর আস্তে আস্তে কমবে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। এতে মানুষের শরীরে ঘাম হচ্ছে, গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। কয়েক দিন পর বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে, তখন তাপপ্রবাহ আর থাকবে না।
গতকাল সন্ধ্যায় পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম ও সিলেটে অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। রাজশাহী, দিনাজপুর, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ঢাকা, বরিশাল বিভাগসহ রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ এবং ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও ফেনী জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের তথ্যমতে, গতকাল দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ১৩ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট; উৎপাদিত হয়েছে ১১ হাজার ৯৬০ মেগাওয়াট এবং লোডশেডিং করতে হয়েছে ১ হাজার ৪৭১ মেগাওয়াট।