Ajker Patrika
হোম > ছাপা সংস্করণ

বিদ্যুতে অনাগ্রহ চরবাসীর

আরিফুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম

বিদ্যুতে অনাগ্রহ চরবাসীর

‘এই চরত কারেন্ট আইসপে কোনো দিন চিন্তা করি নাই। চরত কারেন্ট দিয়া শেখ হাসিনা দেখে দেইল। হামরা মরি যাওয়ার পর যদি বাপ-দাদাক যায়া এই কথা (বিদ্যুতের সংযোগ নেওয়া) কই ওমরা বিশ্বাসে করবার নয় চরত কারেন্ট আসছে।’ প্রত্যন্ত চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগ পেয়ে এভাবেই নিজেদের উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন ব্রহ্মপুত্র নদের রলাকাটার চরের বাসিন্দা মনছের।

রলাকাটার চর কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের দ্বীপচর। যাত্রাপুর ঘাট থেকে সীমান্তবর্তী এই চরে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌযান। বাংলাদেশের জলসীমার শেষ প্রান্তে প্রায় দেড় ঘণ্টা নৌ দূরত্বের এই চরে পৌঁছেছে বিদ্যুৎ। ‘চরে বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব নয়’ স্থানীয়দের এমন ধারণা ভুল প্রমাণ করে নদের তলদেশ দিয়ে সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন পৌঁছালেও অনেকে সংযোগ নিতে চাচ্ছেন না। রলাকাটার বাসিন্দা মনছের সরবরাহ লাইন পৌঁছায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেও নিজ বাড়িতে তিনি সংযোগ নেননি। বারবার ভাঙনে অতিষ্ঠ মনছের বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়াকে বাড়তি ঝামেলা মনে করছেন।

মনছের বলেন, ‘কারেন্ট আসছে এতে আমরা খুশি। কিন্তু সংযোগ নিয়া কী করুম। নদী ভাঙলে এই লাইন দিয়া কাম কী? আমাগো সোলারই ভালো। সরকার যদি নদীর ভাঙনটা ঠেকাইতো তাইলে বেশি উপকার হইতো। নদী আমাগো বড় সর্বনাশ করে!’

একই আশঙ্কা ও দাবির কথা জানান আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতে আমরা অবশ্যই খুশি। কিন্তু ভিটা আর বাড়িঘর রক্ষা করতে পারি না। বানের সময় এই বিদ্যুৎ আমাগো ঝামেলা বাড়াইবো। আগে ভাঙন ঠেকানোর ব্যবস্থা করেন।’

রলাকাটার বাসিন্দা বেলাল হোসেন জানান, চরে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন পৌঁছালেও মানুষ বাড়িতে সংযোগ নিতে তেমন উৎসাহী না। অনেকে সংযোগ নিলেও ব্যবহার করেন না। বেলাল বলেন, ‘চরাঞ্চলে বিদ্যুৎ আমাদের কাছে অসম্ভবকে সম্ভবসাধন মনে হচ্ছে। তবে চরে সোলার ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্য বেশি। বিদ্যুৎ সুবিধা পেলেও নানা আশঙ্কায় মানুষ সংযোগ নিতে চায় না। এই ভরা সেচ মৌসুমেও মানুষ বিদ্যুতে চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহার না করে ডিজেলে চালিত শ্যালো ইঞ্জিন ব্যবহার করছে। বসতবাড়িতেও ব্যবহারে আগ্রহ কম।’

সংযোগ নিতে স্থানীয়দের অনাগ্রহের কথা স্বীকার করেন রলাকাটার চরে দায়িত্বপ্রাপ্ত পল্লী বিদ্যুতের অ্যাসিস্ট্যান্ট জুনিয়র প্রকৌশলী লুৎফর রহমান। এই চরে প্রায় দেড় শ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, নভেম্বর থেকে চরে সংযোগ দেওয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু মানুষ মিটার নিতে চায় না। তাঁদের ভাষ্য, ঘরবাড়ি থাকে না, বিদ্যুৎ নিয়ে কী করবেন।

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার (চ. দা.) মহিতুল ইসলাম বলেন, চরগুলো স্থিতিশীল নয়। ফলে সরবরাহ লাইনের কাজে বেশ কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিদ্যুতের খুঁটি স্থানান্তর করতে হচ্ছে, সার্বক্ষণিক তদারকিতে রাখতে হচ্ছে।

স্থানীয়দের আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে মহিতুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ভাঙনে কারও বাড়ি স্থানান্তর হলে আমাদের লোকজন ওই বাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে মিটার জমা রাখবেন। ফলে তাঁদের বাড়তি বিল পরিশোধের কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না।’

কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্যমতে, সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে নদীর তলদেশ দিয়ে সরবরাহ লাইনের মাধ্যমে জেলায় এই পর্যন্ত ৫৯টি চরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এসব চরের ১৬ হাজারেরও বেশি পরিবার সংযোগ নিয়েছে। এখনো কাজ চলমান রয়েছে।

মহাসড়কে ডাকাতি, লক্ষ্য প্রবাসীরা

বিআরটি লেনে বেসরকারি বাস

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

সন্দ্বীপ সুরক্ষা প্রকল্প: এক বছরেও শুরু হয়নি কাজ

ঢাকা সড়ক পরিবহন: প্রশ্নবিদ্ধ কমিটিতেই চলছে মালিক সমিতির কার্যক্রম

৪০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রি করবে টিসিবি

৮ বছরে শিশুহত্যা হয়েছে ৪০০০

যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধির শীর্ষে বাংলাদেশ, তবে বাজারে পিছিয়ে

দেশে ব্যবসায় ঘুষ–দুর্নীতিসহ ১৭ রকমের বাধা

বিদ্যালয়ের জমিতে ৩৯১টি দোকান, ভাড়া নেয় কলেজ