মো. শামীমুল ইসলাম, আগৈলঝাড়া
বেকারত্ব ও দারিদ্র্যে দিশেহারা ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার গ্রামের নির্মল কান্তি বিশ্বাস। তবে কঠোর পরিশ্রমে শেষ পর্যন্ত মুরগির খামারে স্বাবলম্বী হয়েছেন নির্মল।
নির্মল কান্তি বিশ্বাস বলেন, ২০২০ সালে স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে ৩০ হাজার টাকা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে অল্প পরিসরে একটি মুরগির খামার শুরু করেন। অল্প দিনের মধ্যে মুরগি পালনে সাফল্য আসায় ওই ঋণ শোধ করেন। পরে ৫০ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে পুকুরের ওপর মুরগির খামার, মিশ্র মাছ চাষ ও ৪টি বরজ তৈরি করেন।
সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে নিজ হাতে গড়া খামারে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মল। বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় অন্য খামারিদের দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। প্রথমে আমার খামারে মুরগির সংখ্যা ছিল মাত্র ৫০ টি। ধীরে ধীরে মুরগির সংখ্যা বেড়ে এখন ১ হাজার ২০০টি হয়েছে।
নির্মল বলেন, দেশি ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি খাবার খামারে ব্যবহার করি। ১ হাজার ২০০ মুরগির জন্য দুই মাসে দুই টন খাদ্য লাগে। স্টেরয়েডমুক্ত মুরগি পালন করায় এলাকাবাসী বেশি দাম দিয়েও অনেক সময় নিয়ে যান।
মুরগির যত্ন ও খামার পরিচ্ছন্নতায় কি ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন জানতে চাইলে বলেন, সাত দিন অন্তর লিটার পাল্টে দিই। কিছুদিন পর পর ডাক্তার এসে পরীক্ষা করেন মুরগিগুলো সুস্থ আছে কি না।
জানা যায়, নির্মল একদিন বয়সের মুরগির বাচ্চা কিনে আনেন। লালন-পালন করে মোটামুটি বড় করতে ৬০-৭০ দিনের মতো সময় লাগে। আগের তুলনায় মুরগির খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন এই খামারি।
নির্মল কান্তি বলেন, ‘আমার সমবয়সী বা আমার ছোট-বড় যারা স্বপ্ন দেখছেন নিজে কিছু করে পরিবারের পাশে দাঁড়াবেন। যে যে কাজে পারদর্শী সে কাজের মাধ্যমে নিজেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলুন। আজকাল চাকরির বাজারে সবার জায়গা হয় না। বেকারত্বের খাতায় নাম উঠে যায়। তাই অলস সময়টুকু নিজেকে গড়তে কাজে লাগান।’ নির্মল জানান পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সুখে স্বচ্ছন্দে দিন কাটছে তার।
সাফল্যের বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলম বলেন, সততা, নিষ্ঠা ও নিরলস পরিশ্রমে নির্মল কান্তিকে সাফল্য এনে দিয়েছে।