রবার্তো কার্লোস, রোনালদিনহো থেকে স্যামুয়েল ইতো—কেউই বাদ যাননি। লা লিগায় এসে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন তাঁরাও। লাতিন ও আফ্রিকার অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ফুটবলারকে এমন দুঃসহ মুহূর্তের মুখোমুখি হতে হয়েছে বহুবার। ইউরোপীয় ফুটবলে বর্ণবাদ যেন নৈমিত্তিক ঘটনা!
ইন্টার মিলান ছেড়ে কার্লোস রিয়াল মাদ্রিদে এসে বর্ণবাদের শিকার হয়েছিলেন। সেবার বার্সেলোনার সাবেক মিডফিল্ডার পেপ গার্দিওলা বলেছিলেন, স্প্যানিশ ফুটবলে বর্ণবাদ স্বাভাবিক বিষয়। ম্যানচেস্টার সিটির কথা যে ঠিক, সেটা এখন হাড়ে হাড়ে বুঝছেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র।
গত পরশু ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে ১-০ গোলে হেরেছে রিয়াল। তবে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যদের হারের চেয়েও ম্যাচটি এখন আলোচনায় ভিনির আবারও বর্ণবাদের শিকার হওয়া ঘটনা। প্রতিপক্ষ দলের এক সমর্থক রিয়াল উইঙ্গারকে উদ্দেশে কিছু বললে তেড়ে পাল্টা জবাব দেন ভিনি। এ সময় অনেকক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। এ ঘটনায় ভিএআর দেখে যোগ করা ষষ্ঠ মিনিটে ভিনিকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম লাল কার্ড দেখলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
সবশেষ ভ্যালেন্সিয়ার মাঠে বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়ে চটেছেন ভিনি। ঘটনার পর ব্রাজিলিয়ান তারকার টুইট, ‘লা লিগায় বর্ণবাদী আচরণ খুবই স্বাভাবিক বিষয়। ফেডারেশনও তাই মনে করে। যে টুর্নামেন্ট একসময় রোনালদিনহো, রোনালদো, ক্রিস্টিয়ানো, মেসিদের ছিল, এখন তা বর্ণবাদীদের। স্প্যানিশদের অনেকেই হয়তো আমার সঙ্গে একমত হবেন না। কিন্তু আজ আমি বলছি, ব্রাজিলে স্পেন হচ্ছে বর্ণবাদী জাতি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন ঘটনা প্রতি সপ্তাহে ঘটে। আমার কিছুই করার থাকে না তখন। তবে আমি এই বর্ণবাদের শেষ দেখে ছাড়ব।’
তবে বর্ণবাদের ঘটনায় উল্টো ভিনির ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছেন লা লিগা সভাপতি। হাভিয়ের তেবাসের পাল্টা টুইট, ‘লা লিগার সমালোচনা করার আগে নিজেকে সঠিকভাবে জানা জরুরি। তোমাকে যেন কেউ কাজে লাগাতে না পারে, সে বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত।’
কথার লড়াই এখানেই থেমে থাকেনি। ভিনির পাল্টা টুইট, ‘বর্ণবাদের সমালোচনা না করে লা লিগার সভাপতি সামাজিক মাধ্যমে আমাকে পাল্টা আক্রমণ করলেন। আপনি যতই না বোঝার ভান করুন, এটা আপনার সুনাম নষ্ট করবে। আপনার পোস্টের কমেন্টগুলো দেখলে অবাক হবেন। নিজেকে গুটিয়ে নেওয়ায় আপনার আর বর্ণবাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য রইল না।’
তেবাস প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ালেও ভিনির ওপর বর্ণবাদীর অভিযোগের তদন্তের কথা জানিয়েছে লা লিগা। তাঁর ক্লাব রিয়ালও বর্ণবাদকে ‘ঘৃণামূলক অপরাধ’ অভিহিত করে স্প্যানিশ প্রসিকিউটরদের কাছে ফৌজদারি অভিযোগ করেছে। এছাড়াও ভিনি পাশে পাচ্ছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোকে। রিয়াল তারকাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমর্থন জানিয়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে, রোনালদো নাজারিও, আনচেলত্তি, রিও ফার্দিনান্দ, গ্যারি লিনেকার।